অবশেষে এলজিইডি’র সেই নির্বাহী প্রকৌশলী বাদশা মিয়ার পাবনা ত্যাগ : ঠিকাদারদের মধ্যে স্বস্তি
পিপ (পাবনা) : স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পাবনার বিতর্কিত নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম বাদশা মিয়া অবশেষে পাবনা ত্যাগ করেছেন। গতকাল রোববার সকালে তিনি অত্যন্ত সংগোপনে দায়িত্ব বুঝে দিয়ে পাবনা ছাড়েন। বাদশা মিয়ার পাবনা ত্যাগের খবরে ঠিকাদারসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তির ভাব লক্ষ করা গেছে। তবে এতদিন যারা বাদশার মিয়াকে ভুল পথে পরিচালনা করেছে তারাই আবার ভোল পাল্টিয়ে সদ্য যোগদানকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমানের প্রিয় ভাজন হতে ঘুর ঘুর করছে।
গত ২৫ মার্চ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পাবনার বিতর্কিত নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম বাদশা মিয়া কে ওএসডি করে এলজিইডির সদর দপ্তরে বদলি করা হয়। এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো: মতিয়ার রহমান তাকে বদলী করেন। তার বিরুদ্ধে করোনা ভাইরাস কালীন সময়ে ত্রানের নামে ঠিকাদারদের নিকট চাঁদাবাজী, কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই ঠিকাদারদের কোটি কোটি টাকার বিল প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
অতি সম্প্রতি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম বাদশা মিয়া নিজের অনুসারী একটি প্রভাবশালী ঠিকাদারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাধারণ ঠিকাদারদের জোরপূর্বক ত্রান সহায়তার কথা বলে কথিত ত্রান তহবিলে অর্থ প্রদানে বাধ্য করেছেন বলে দাবী ভুক্তভোগী একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করে। পরে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে দেশব্যাপী তোলপাড়ের সষ্টি হয়।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার আগের নিজের মনমতো ও পছন্দমত ঠিকাদারদের বিল প্রদান করা। আবার তার অনুসারী নয় এমন ঠিকাদারদের কাজ সুষ্ঠুভাবে শেষ করা হলেও বিল প্রদান না করে নানা তালবাহানা করা। পছন্দের ঠিকাদার না হলে কি করে কাজটি বাতিল করে পুনরায় টেন্ডার আহবান করা যায়, এমন কাজ করা ছিল কেএম বাদশা মিয়ার নিকট মামুলি ব্যাপার।
এলজিইডির একটি সুত্র জানান, পাবনায় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে একেএম বাদশা মিয়া যোগদানের পর থেকেই ঠিকাদারদের দমনপীড়ন শুরু করেন। রাতারাতি কিছু ঠিকাদার তার খাস চামচা বনে যান। বিষয়টি এলজিইডির প্রধান কাযালয়ও অবহিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কয়েকটি তদন্ত শেষে প্রধান কাযালয়ও এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।
তার বদলীর বিষয়টি বুঝতে পেরে গত এক সাপ্তাহে কাজ সমাপ্ত হয়নি এমন অন্তত ১৫টি কাজের কয়েক কোটি টাকার বিল প্রদান করেছেন এই নির্বাহী প্রকৌশলী। যা সম্পূণ অনৈতিক ভাবে বিশেষ সুবিধা নিয়েই এই কাজগুলো করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন একাধিক ঠিকাদার।
গত সাপ্তাহে জিপিবিআরআইডিপি প্রকল্পের জেলার বেড়া উপজেলার কাজীশরিফপুর থেকে শ্যামপুর ক্যানেল সড়ক ভায়া বুলুন্দুর জিপিএস সড়ক উন্নয়ন কাজের বিল বাবদ ৪৮ লক্ষ টাকা প্রদান করেছেন। যার নথি অনেকের নিকটই রয়েছে বলেও জানান তারা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পাবনার সদ্য যোগদানকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বার্তা সংস্থা পিপ‘কে বলেন, আক্রোশের বশবর্তি হয়ে তিনি কোন ঠিকাদারকে ক্ষতি করবেন না, তবে কোন অনিয়ম দুর্নীতিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিবেননা।