অভিযোগ, পাল্টা আভিযোগ শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে পাবনার চারটি পৌরসভা নির্বাচন
নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : অভিযোগ, পাল্টা আভিযোগ আর শেষ মুহুর্তে প্রচার প্রচারণায় জমে উঠেছে দ্বিতীয় ধাপে পাবনার চার পৌরসভা নির্বাচন। তবে বিএনপি প্রার্থীদের ভয়ভৃতি প্রদর্শনসহ প্রচারনায় বাধার অভিযোগ উঠেছে। তবে ক্ষমতাশিন দলের প্রার্থীরা বলছেন, জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি মিথ্যাচার করে পরাজয় জেনে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে।
আগামী ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে পৌরসভার নির্বাচন সামনে রেখে সরগরম পাবনার ঈশ^রদী, সাঁথিয়া, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর পৌর এলাকা।
ঈশ্বরদী : পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভায় নয়টি ওয়ার্ড রয়েছে। এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইসহাক আলী মালিথা (নৌকা), বিএনপির রফিকুল ইসলাম নয়ন (ধানের শীষ) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মো: মাসুম (হাতপাখা)। সাধারণ কাউন্সিলর রয়েছে মোট ৩৯জন আর সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর লড়ছেন ৩ জন। এই পৌরসভায় ভোটার রয়েছে ৫৫ হাজার ৫৬৮জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ২৭ হাজার ২৪১জন ও নারী ভোটার রয়েছে ২৮ হাজার ৩২৭জন।
সাঁথিয়া : সাঁথিয়া পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩ জন। এরা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো: মাহাবুবুল আলম বাচ্চু (নৌকা), বিএনপির সিরাজুল ইসলাম (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র মো: আক্তার হোসেন (নারিকেল গাছ)। এই পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩০ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ৮জন। মোট ভোটার রয়েছেন ৩১ হাজার ৯২জন। এর মধ্যে পুরুল ভোটার রয়েছে ১৫ হাজার ৫৫৫জন ও নারী ভোটার রয়েছে ১৫ হাজার ৫৩৭জন।
ফরিদপুর : ফরিদপুর পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩ জন। এরা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খন্দকার কামরুজ্জামান মাজেদ (নৌকা), বিএনপির এনামুল হক (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র ইমদাদুল হক (নারিকেল গাছ)। এই পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৯ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ১১জন। মোট ভোটার রয়েছেন ১১ হাজার ৮৬৬জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ৫ হাজার ৭৬৫জন ও নারী ভোটার রয়েছে ৬ হাজার ১০১জন।
ভাঙ্গুড়া : ভাঙ্গুড়া পৌরসভায় বিএনপি প্রার্থী আব্দুল কাদেরের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী গোলাম হাসনায়েন রাসেলকে বেসরকারী ভাবে মেয়র নির্বাচিত ঘোষনা করা হয়েছে। তবে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ২১জন প্রার্থী ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১০জন। মোট ভোটার রয়েছেন ১৬ হাজার ৩৩২জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ৭ হাজার ৯৯৯জন ও নারী ভোটার রয়েছে ৮ হাজার ৩৩৩জন।
এদিকে নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আশায় প্রার্থীরা রাত-দিন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছেন। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রতি। তবে অভিযোগ, পাল্টা আভিযোগ আর শেষ মুহুর্তে প্রচার প্রচারণায় জমে উঠেছে পাবনার এই চার পৌরসভা নির্বাচন। বরাবরই এই চার পৌর এলাকায় শক্ত অবস্থান রয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির।
প্রচারে পিছিয়ে থাকতে চান না প্রার্থীরা। জয়ের আশাও ছাড়ছেন না কেউ। তবে বিএনপি প্রার্থীদের অভিযোগ, প্রচারনায় বাধাসহ ভয়ভৃতি প্রদর্শন করছেন তারা।
ঈশ্বরদী পৌরসভার বিএনপির ধানের শীষ প্রাথী রফিকুল ইসলাম নয়ন অভিযোগ করে বলেন, আমার বাড়িতে গুলি পর্যন্ত করেছে ইতোমধ্যে ঈশ^রদী থানা পুলিশ ভিডিও ফুটেজ নিয়ে গেছে। আজকে আমার জীবনের রিক্স নিয়ে এখনো মাঠে আছি এবং শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকব। আমি অভিযোগ দিয়েছি ঈশ^রদী থানা ও রিটানিং অফিসারকেও।
ফরিদপুর পৌরসভার বিএনপির ধানের শীষ প্রাথী মো: এনামুল হক বলেন, প্রতিক বরাদ্দের পর থেকে আমি যে কয়টি অফিস করেছি সেই কয়টি অফিসেই বাধার সৃষ্টি করেছে, পোস্টার ছিরে দিছে। ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডে আমার একটি পোস্টারও নেই। প্রতিদিনই পোস্টার লাগাই, প্রতিদিনই পোস্টার ছিরে ফেলে। এ বিষয়ে রিটানিং অফিসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহৃত করা হয়েছে।
এদিকে ক্ষমতাশীন দলের প্রার্থীরা বলছেন, জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি মিথ্যাচার করে পরাজয় জেনে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে।
ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র পদে নৌকা প্রার্থী ইছাহক আলী মালিথা বলেন, বিএনপির এটা মিথ্যাচার এটাকে আমরা ঘৃনার চোখে দেখি। শুধু আমরা না, ঈশ^রদীর বিএনপির একটি অংশ তাকে বয়কট করেছে। তাহলে আমরা কোথায় তাকে নির্বাচনে বাধা দিচ্ছি, মিথ্যাচার কিন্তু নিন্দনীয় বিষয়।
সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র পদে নৌকা প্রার্থী মাহবুবুল আলম বাচ্চু বলেন, আমাদের কর্মীকে তারাই মারপিট করেছে। আমরা ধর্যের সাথে মোকাবেলা করছি। পরাজয় জেনে তরা মিথ্যাচার করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগের কোন বিরোধ নাই। সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। এবং জনগনের দারে দারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছে।
ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র পদে নৌকা প্রার্থী আব্দুল মাজেদ বলেন, একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে একজন প্রার্থী স্ব স্ব নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা তারা সম্পূণ এবং স্বাধীনভাবে পরিচালনা করছেন। নির্বাচন শানিতপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এখানে কোন রকম ব্যাতয় ঘটবে না।
ভোটাররা বলছেন, বিগত উপজেলা নির্বাচনে ভোটারদের ভোটরাধিকার ছিলো না। যদি পৌর নির্বাচনে ভোটারদের ভোটারিধিকার থাকে তাহলে আমরা ভোট দিতে যাব। এবং সরকারের কাছে আমাদের এটাই চাওয়া এই নির্বাচনে যেন আমরা ভোট দিতে পারি।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচনের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে কিছু ছোটখাটো ঘটনায় কথা স্বীকার করে এই কর্মকর্তা বরছেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহনে মাঠে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কাজ করছেন বলছেন জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ট এবং সুন্দর ভাবে সফল করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ছোটখাট কিছু ঘটনা পরিলক্ষিত হলে প্রত্যেক পৌরসভার জন্য আমরা আমাদের ৩জন করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তারা বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন এবং এই সমস্যাগুলো সমাধান করছেন। এবং আইনশৃঙ্খলা বাহীনিও সক্রিয় রয়েছেন।