অ্যাপল-গুগলে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের প্রযুক্তি

আইটি: অবশেষে চলে এসেছে অ্যাপল-গুগল জোটের তৈরি কনট্যাক্ট ট্রেসিং করার প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি অ্যাপের মাধ্যমে জানা সম্ভব হবে কোনো ব্যক্তি কোভিড-১৯ আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে বা কাছাকাছি গিয়েছেন কি না।

বুধবার প্রযুক্তিটি ছাড়ার ব্যাপারে ঘোষণা দিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট দুটি। বিভিন্ন দেশে জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাদেরকে করোনাভাইরাস লড়াইয়ে সাহায্য করতে পারবে এ প্রযুক্তি। শুরুতে এ প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্য ও ২২টি দেশকে। খবর ইউএসএটুডে’র।

এক বিবৃতিতে নর্থ ডেকোটা গভর্নর ডাগ বারগাম অ্যাপটিকে “সমাজ ও অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ” বলে উল্লেখ করেছেন।
অবশ্য প্রতি পাঁচ জনে অবশ্য প্রায় তিনজন মার্কিনী জানিয়েছেন যে গুগল এবং অ্যাপলের কনট্যাক্ট ট্রেসিং প্রযুক্তি ব্যবহারের ইচ্ছে নেই বা অন্য কোনো কারণে ব্যবহার করতে পারবেন না তারা।

এ প্রযুক্তিটি নিজে কোনো অ্যাপ নয় বরং এটি ব্যবহার করা যাবে বিভিন্ন দেশের সরকারের তৈরি কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপের সঙ্গে। প্রযুক্তিটির সহায়তায় কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে জানাতে পারবে সংস্পর্শে আসা মানুষদের মধ্যে কারো করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা গেছে কি না বা সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে কারো পরবর্তীতে করোনাভাইরাসে পজিটিভ এসেছে কি না।

প্রতিটি তথ্যই পরিচয় অজ্ঞাত রেখে ব্যবহারকারীকে জানাবে কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ। কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপগুলো ব্লুটুথ প্রযুক্তি নির্ভর। মূলত ব্লুটুথ তরঙ্গের মাধ্যমেই নিজ কাজ করবে অ্যাপটি। নিজ প্রযুক্তির মাধ্যমে যাতে অধিকাংশ স্মার্টফোনে যাতে ব্লুটুথ সংযোগ চালু থাকে এবং তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়, সে চেষ্টা করেছে অ্যাপল-গুগল।

চার্জ বাঁচাতে কিছু সময় পরপর ব্লুটুথ তরঙ্গ বন্ধ করে দেয় আইফোন। ফলে বাঁধা পড়ে কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপের নিরবিচ্ছিন্ন কার্যক্রমে। এখন এই প্রযুক্তির সাহায্যে সমস্যাটির সমাধান করা সম্ভব হবে। তবে, বিপাকে পড়বেন যারা অ্যাপল-গুগলের প্রযুক্তির বাইরে গিয়ে অ্যাপ তৈরি করতে চাইবেন।

অনেক দেশই গুগল-অ্যাপলের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাইছে না কারণ এই প্রযুক্তি কোনো কেন্দ্রীয় সার্ভারে তথ্য মজুদ করতে দেয় না। এর যাবতীয় তথ্য থাকে যার যার ফোনে, বিকেন্দ্রীভূত আকারে। মোবাইল অ্যাপের অবস্থান ডেটা, ফোন নম্বর এবং অন্যান্য মোবাইল অ্যাপের সংগ্রহের ব্যাপারে মানা করে অ্যাপল ও গুগল যে নিয়মটি করেছে তা নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

অ্যাপ তৈরিতে নিজ নিজ পন্থা প্রয়োগ করছে দেশগুলো। কোনো দেশ কেন্দ্রীভূত প্রক্রিয়ায় বা কেন্দ্রীয় সার্ভারে ডেটা জমা রাখার কথা জানিয়েছে। আবার কোনো দেশ কেন্দ্রবিমুখ বা ব্যবহারকারীদের ডিভাইসেই ডেটা রাখার কথা বলছে।

হিসেবে কেন্দ্রীভূত অ্যাপের থেকে কেন্দ্রবিমুখ অ্যাপে ডেটার উপর নিয়ন্ত্রণ বেশি থাকবে ব্যবহারকারীদের। ফলে গোপনতা সমর্থকরা কেন্দ্রবিমুখ প্রক্রিয়াটিকে পছন্দ করছেন বেশি। নিজস্ব ট্রেসিং অ্যাপ প্রযুক্তি নির্মাতা অ্যাপল-গুগল জোটও রায় দিয়েছে কেন্দ্রবিমুখ অ্যাপের পক্ষেই।

অ্যাপল-গুগল জোটের প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য অ্যাপকে অবশ্যই কেন্দ্রবিমুখ হতে হবে বলেও আগাম জানিয়ে রেখেছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান দুটি। কেন্দ্রমুখী অ্যাপ তৈরি করায় এর আগে অ্যাপল-গুগল জোটের সাহায্য পায়নি কলম্বিয়া ও ফ্রান্স।

কনট্যাক্ট ট্রেসিং কার্যকর করতে অনেক মানুষের অ্যাপটি ব্যবহার করতে হবে। বেশ কিছু গবেষণার তথ্য বলছে, আনুমানিক অন্তত ৬০ শতাংশকে ব্যবহার করতে হবে কনট্যাক্ট ট্রেসিং। তাহলেই কেবল সম্ভব হবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!