ইন্দোনেশিয়ার বিধ্বস্ত বিমানের আরোহীদের উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত

ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার জাভা সাগরে বিধ্বস্ত লায়ন এয়ারের উড়োজাহাজের নিখোঁজ আরোহীদের উদ্ধার অভিযানে ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছে জাকার্তা। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থা বাসারনাসের প্রধান মুহাম্মদ সিয়াগি গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কোথাও তল্লাশি চালানো বাকি নেই। আমরা নিহতদের মরদেহ অনুসন্ধান করা বন্ধ করেছি। এখন পর্যবেক্ষণের মধ্যেই অভিযান সীমাবদ্ধ থাকবে।’

২৯ অক্টোবর স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ২০ মিনিটে উড্ডয়নের ১৩ মিনিটের মাথায় নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় প্লেনটি। এতে সেখানে থাকা দুই নবজাতক, এক শিশু, দুই পাইলট ও ছয় কেবিন ক্রুসহ ১৮৯ আরোহীর সবার মৃত্যু হয়। উদ্ধার অভিযানে কর্তৃপক্ষ ৭৯টি মরদেহ উদ্ধারে সক্ষম হলেও খোঁজ মেলেনি ১১০ যাত্রীর। তবে তাদের উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে যাওয়ায় অভিযানের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

তবে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘটলেও প্লেনটির দ্বিতীয় ব্ল্যাক বক্স ককপিট ভয়েস রেকর্ডার উদ্ধারে অনুসন্ধান অব্যাহত রাখবে কর্তৃপক্ষ। ইন্দোনেশিয়ার পরিবহন নিরাপত্তা কমিটির (কেএনকেটি) প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন সুয়ারিয়ান্তো জাহিওনো। তিনি বলেন, বিমান বিধ্বস্তের কারণ বোঝার জন্য ভয়েস রেকর্ডারটি পাওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেছেন, ব্ল্যাক বক্সের তথ্য থেকে সেদিনের ঘটনার ব্যাপারে ৭০-৮০ শতাংশ জানা গেছে। তবে দুর্ঘটনার কারণ শতভাগ বোঝার জন্য ককপিটে কী কথাবার্তা হয়েছিল তা জানা দরকার। তবে বিমান বিধ্বস্তের সময় ককপিট ভয়েস রেকর্ডারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে।

উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণার আগে বিমানের ধ্বংসাবশেষ ও বিমানে থাকা মৃতদের দেহাবশেষ খুঁজতে নিয়োজিত একজন ডুবুরির মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় নিহত ডুবুরি সিয়ারুল আন্তো (৪৮) উদ্ধার তৎপরতাতেই নিয়োজিত ছিলেন। ২৯ অক্টোবর জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হওয়া জেটি-৬১০ ফ্লাইটটি জাকার্তা বিমানবন্দর থেকে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ শহর পাঙকাল পিনাঙয়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু উড্ডয়নের ১৩ মিনিটের মাথায় নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ওই এলাকার আশপাশে যারা নৌকায় ছিলেন তারা আকাশ থেকে বিমানটিকে সাগরে পড়তে দেখেছেন।

আন্তো ইন্দোনেশিয়ার একজন জ্যেষ্ঠ ডুবুরি। ২০১৪ সালে ইন্দোনেশিয়ায় এয়ার এশিয়ার একটি বিমান বিধ্বস্ত হলে যে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হয়েছিল তাতে তিনি ডুবুরি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এই ঘটনাতে বিধ্বস্ত বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের ধ্বংসাবশেষ ও নিহত ১৮৯ জনের দেহাবশেষ উদ্ধারে ডুবুরিরা বড় ভূমিকা রাখছেন। সূত্র: আল জাজিরা।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!