ঈশ্বরদীতে দুই ভাইকে খুঁটির সাথে বেঁধে চুল কেঁটে দেওয়াসহ অভিযোগ: নির্যাতনকারী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : পাবনার ঈশ্বরদীতে দুই সহোদর ভাইকে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেঁধে চুল কেঁটে দেওয়াসহ শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগপাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পাবনা পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খানের নির্দেশে শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে নির্যাতনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সাহাপুর ইউনিয়ন আওতাপাড়া নুরজাহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ভিলেজ ফ্রেশ ফুড এন্ড এগ্রো কোম্পানির মালিক জিসান (৩৫) তার প্রতিষ্ঠানে ভেজাল মধু সংগ্রহের দায়ে মোঃ আল আমিন (২২) ও তার ভাই মোঃ আলাল (১৫) কে পাশ্ববর্তী আলাউদ্দিন বিশ্বাসের মিলের চাতালের বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেঁধে চুল কেঁটে দিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে।
ভিলেজ ফ্রেশ ফুড এর মালিক জিসান উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের দীঘা গ্রামের রজব আলীর ছেলে। বর্তমানে সে ঈশ্বরদী শহরের মশুড়িয়াপাড়ায় বসবাস করে। নির্যাতনের শিকার  দুই ভাই আল আমিন এবং আলাল উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।
জানা যায়, ভিলেজ ফুড এন্ড এগ্রো নামক প্রতিষ্ঠানটিতে তেল, ডাল, মধুসহ বিভিন্ন পণ্য প্যাকেটজাত করে পাইকারিভাবে বিক্রয় করে থাকে। আল আমিন এবং তার ভাই আলাল পেশায় মধু সংগ্রহকারী এবং তারা প্রায় এক বছর যাবত উক্ত প্রতিষ্ঠানটি মধু বিক্রয় করে আসছিল।
প্রতিষ্ঠানের মালিকের অভিযোগ প্রথমদিকে তারা দুই ভাই খাঁটি মধু সংগ্রহ করলেও পরবর্তীতে তারা প্রতিষ্ঠানে ভেজাল মধু বিক্রয় করে। বিষয়টি দুই ভাইকে অবগত করলে তারা এর ক্ষতিপূরণ বাবদ গতকাল ১০ কেজি মধু প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়ে আসে। জিসান তাদের দুই ভাইকে একসাথে পেয়ে পূর্বের মধুর সকল টাকা দাবি করেন এবং দুই ভাইকে প্রতিষ্ঠানের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেঁধে মারপিট করেন এবং মাথায় মধু ঢেলে দিয়ে চুল কেটে দেন।
বিষয়টি ফেসবুকসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর লোকজনের নজরে আসলে প্রতিষ্ঠানের মালিক ও অন্যান্য লোকজন আল আমিন এবং আলালের অভিভাবকদের ঘটনাস্থলে ডেকে তাদের দুজনকে বুঝিয়ে দেন। আল আমিন এবং আলাল অত্যন্ত গরীব ঘরের সন্তান। অন্যের জমিতে ঘর বানিয়ে বসবাস করেন। তাদের মা একজন ভিখারি।
দুই ভাইকে এভাবে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন এবং চুল কেঁটে দেওয়ার ঘটনাটি পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান জানতে পেরে ঈশ্বরদী থানার ওসিকে উক্ত বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
রুপপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান করে সত্যতা পাওয়ায় নির্যাতনকারী জিসানকে গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয়ে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!