ঈশ্বরদীতে প্রয়াত অধ্যাপকের স্ত্রীকে যেভাবে খুনের পরিকল্পনা করা হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক,  পাবনা: পাবনার ঈশ্বরদীতে গৃহস্থলি কাজে এসে দেখতে পান রাজশাহী কলেজের প্রয়াত অধ্যাপক হাবিবুল্লাহর স্ত্রী হাজেরা খাতুন বাসায় একা থাকেন। একজন কেয়ারটেকার থাকলেও তিনি বৃদ্ধ এবং চোখেও ভাল দেখতে পান না। এমন সুযোগ পেয়েই অধ্যাপকের স্ত্রীকে খুন এবং টাকা-পয়সা চুরির পরিকল্পনা করেন আবিদ হাসান (৩২)।

পরিকল্পনা অনুযায়ী এক রাতে বৃদ্ধা নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে টাকা-পয়সা চুরি করে পালিয়ে যান আবিদ। তবে পালিয়ে গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি, হত্যাকান্ডের ৯ দিন পর আবিদকে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুনসী।

গ্রেফতারকৃত আবিদ হাসান (৩২) পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বিলসলঙ্গি জোলাপাড়া গ্রামের মৃত রতন আলীর ছেলে। ঈশ্বরদীর নতুনহাটের চর সাহাপুর এলাকার লতিফের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। হত্যাকান্ডের ৫/৬দিন পূর্বে নিহত হাজেরা খাতুনের বাড়িতে কাজ করেন।

পুলিশ সুপার জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী সুযোগের অপেক্ষায় থাকে আবিদ। হঠাৎ করে ভিকটিম হাজেরা খাতুন বাসায় শিমুল তুলা, সুপারী ও সজিনা পাড়ানোর প্রয়োজন পরলে তিনি তার বোন আয়শা খাতুনের মাধ্যমে আবিদ হাসানকে খবর পাঠায়। খবর পেয়ে আবিদ হাসান ঘটনার দিন গত ৩ এপ্রিল সকাল ৮টার দিকে হাজেরা খাতুনের বাসায় আসেন। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে হাজেরাকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেয়ে আসামি আবিদ বালিশ দিয়ে ভিকটিমের শ্বাসরোধ করেন, এসময় হাজেরা খাতুন জেগে গিয়ে নড়াচড়া করলে তিনি খাট হতে নিচে পরে মৃত্যু  নিশ্চিত করে হাতে থাকা চুরি ও কানের দুল খুলে নেয়। এরপর আলমিরা খুলে ৩০ হাজার ৭শ’ টাকা এবং একজোড়া কানের দুল নিয়ে বাড়ি তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান।

তিনি আরও জানান, পরে রাত ৮টার দিকে তার রক্তাক্ত মরদেহ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ হস্তান্তর করে। এ সংক্রান্ত মামলা দায়ের পর গত ১২ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে কক্সবাজার কলাতলীস্থ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সংলগ্ন এহসান বোর্ডিং থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে এক জোড়া সিটি গোল্ডের চুরি, দুই জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ২০ হাজার টাকা এবং নিহতের ব্যবহৃত একটি নোকিয়া বাটন ফোন উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ-প্রশাসন) মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) বিপ্লব কুমার গোস্বামী, ডিবির ওসি এমরান মাহমুদ তুহিনসহ পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!