ঈশ্বরদীতে বিএনপি প্রার্থী হাবিবের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও পাবনা-৪ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের ওপর হামলার ঘটনায় ৫৩ জনের নাম উল্লেখসহ ২০০ অজ্ঞাত যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ঈশ্বরদী থানায় বাদি হয়ে মামলাটি করেন হাবিবের স্ত্রী নাজমা। মামলায় ঈশ্বরদী উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম রাফিককে প্রধান আসামি করে ৫৩ জন নামীয় ও অজ্ঞাত দুই শতাধিক যুবলীগ-ছাত্রলীগের নামে মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঈশ্বরদী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামসুল আলম জানান, ওই মামলায় ইতোমধ্যেই আটজনকে গ্রেফতার করে গত বৃহস্পতিবার রাতেই তাদের পাবনা কোর্টে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার মহাদেবপুর কমিদপাড়ার মৃত মসলেম মৃধার ছেলে ময়নুল ইসলাম, শহরের হাসপাতাল রোড জিগাতলা এলাকার নুরুল হকের ছেলে রাশেদুল হক মুন্না, পাকশী সিবিলহাট তালতলা এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে এনামুল হক সুজন, মধ্য অরণকোলা এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম, শেরশাহ রোডের মৃত নূর ইসলামের ছেলে নুরুন্নবী, পিয়ারপুর এলাকার আদম আলীর ছেলে খালেদ হাসান, সাঁড়ার আড়ামবাড়িয়া এলাকার আবদুল রশিদের ছেলে জাহিদ হাসান, পাকশী গাইড ব্যাংক পাড়ার ইউসুব আলীর ছেলে আরব আলী।
থানার ওসি বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, এ ঘটনায় ২৫৩ নেতা-কর্মীর নামে মামলা হয়েছে। মামলায় ৫৩ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জহুরুল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে র্যাব, বিজিবি ও পুলিশ কাজ করছে। নির্বাচনে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসাধীন আছেন হাবিব। নিতম্বে জখম বেশি হাবিবের। তবে তিনি আশঙ্কামুক্ত। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে এ আসনের বিএনপি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। গত বৃহস্পতিবার সকালে হাবিবের সাহাপুর মালিথাপাড়া বাড়ির আঙিনায় অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাবেক এমপি আবদুল বারি সরদার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ধানের শীষের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। পোস্টার ছিড়ে দেওয়া হচ্ছে। নেতাকর্মীদের ওপর নগ্ন হামলা হচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে গায়েবী মামলা দিয়ে গ্রেফতারি ও হয়রানি করা হচ্ছে। এসব গায়েবী মামলা প্রত্যাহারসহ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের নির্বাচনে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হামলার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের গ্রেফতার দাবি করা হয়। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা আক্তারুজ্জামান আক্তার, সাবেক চেয়ারম্যান জার্জিস হোসেন, জিয়াউল ইসলাম সন্টু সরদার, নেফাউর রহমান রাজু, বিএনপি নেতা শহীদ সরদার, আতাউর রহমান রানা, আমজাদ হোসেন, যুবদল নেতা রফিকুল ইসলাম রকি, ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়নসহ কয়েক’শ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
গত বুধবার হাবিবকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় বিএনপির আরও চার নেতাকর্মী আহত হন ও ভাঙচুর করা হয়েছে একটি প্রাইভেটকার।
ওইদিন দুপুর পৌনে ১২টায় ঈশ্বরদী শহরের আলহাজ¦ টেক্সটাইল মিলস উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গণসংযোগ চলাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।