ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা : কারাগারে বিএনপির ৩০ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : ১৯৯৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদীতে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি-বোমা হামলা মামলায় ৩০ আসামীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন পাবনার আদালত।
আজ রোববার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুস্তম আলী এ নির্দেশ দেন। এ মামলায় মোট আসামী ছিলেন ৫২ জন। বাকিদের নামে ওয়ারেন্ট জারি করেছেন আদালত।
আদালত সুত্র জানায়, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামীলীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা সাংগঠনিক সফরে খুলনা থেকে রাজশাহী অভিমুখে ট্রেনযোগে বের হন। পথিমধ্যে ঈশ্বরদী স্টেশনে তার একটি নির্ধারিত পথসভা ছিল। তাকে বহনকারী ট্রেনটি পাকশী স্টেশনে পৌঁছার পরপরই ওই ট্রেনে ব্যাপক গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় ঈশ্বরদী জিআরপি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে ওইদিনই একটি মামলা দায়ের করেন। ৩ বছর পর ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল মোট ৫২ জনের নামে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।
মামলার ৫২ জন আসামীর মধ্যে ৩০ জন স্বশরীরে এজলাসে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন। আসামীরা ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
আদালত সূত্র জানায়, পাবনার অতির্কিত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রোস্তম আলীর উপস্থিতিতে সোমবার সকাল ১০টায় এই মামলার যুক্তিতর্ক শুরু হবে। যুক্তিতর্ক শেষ হলে রায় ঘোষানা করা হবে।
মামলার রাষ্ট পক্ষের আইনজীবি পিপি অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তা বলেন, এই মামলাটা দীর্ঘ ২৫ বৎসর পরে মাননীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুস্তোম আলী আসামীদের জামীন না মুঞ্জুর করে জেল হাজতে নিয়েছেন। আগামী কাল এই মামলার যুক্তিতর্কের দিন রয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে রেল পথে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছেলেন। পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে তাকে বহনকারী ট্রেনবহর যাত্রাবিরতি করলে অতর্কিত ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ^রদী ত্যাগ করেন। পরে রেলওয়ে পুলিশ বাদী হয়ে তৎকালিন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমান ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর মামলাটি পুণ:তদন্ত করে পুলিশ। তদন্ত শেষে নতুন ভাবে ঈশ^রদীর শীর্ষস্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ মোট ৫২ জনকে এই মামলার আসামি করা হয়।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি ছিলেন পিপি অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তা এবং আসামি পক্ষের আইনজীবি ছিলেন অ্যাভোকেট নুরুল ইসরামসহ কয়েকজন।