উত্তরাঞ্চলে অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন স্থবির

ডেস্ক রিপোর্ট: গত এক সপ্তাহ ধরে রাজশাহীর ওপর দিয়ে বয়ে চলা অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহের জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। দিনের বেলাতেও সূর্যের উত্তাপ না ছড়ানোর কারণে কমছে না ঠান্ডা প্রকোপ। এভাবে আরো এক সপ্তাহ চলতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস। এদিকে হাড় কাপাঁনো ঠন্ডায় সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। তারা আক্রান্ত হচ্ছে ঠা-াজনিত নানা রোগে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বাড়ছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত নবজাতক শিশুর সংখ্যা। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন অ্যাজমায় আক্রান্ত রোগীরা। তাপমাত্রা কমতে থাকায় পদ্মাপাড়ের ছিন্নমূল মানুষগুলো শীতের তীব্রতায় কাবু হয়ে পড়েছে। উত্তরের হাড় কাঁপানো ঠা-া বাতাসে স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সকালে ঘন কুয়াশার চাদর ভেদ করে ভোরের সূর্যের দেখা মিললেও থাকছে না উত্তাপ। সন্ধ্যায় খোলা আকাশের নিচে থাকা শীতার্ত মানুষগুলোর শরীরে উষ্ণতা ছড়াতে খড়কুটো জ¦ালাতে হচ্ছে। ভীড় বেড়েছে শীতের পোশাক বিক্রির দোকানগুলোতে।

নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভীড় করছেন। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, রাজশাহীতে এখন দিনের তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে মধ্যে বিরাজ করছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন ছিল ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে গত ২৯ ডিসেম্বর চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আগামি কয়েকদিন রাজশাহী অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশাসহ শৈত্যপ্রবাহ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে দিনের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক আজিজুল হক জানান, শীত বেড়ে যাওয়ায় সব বয়সের মানুষ ঠা-া জনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালে ঠা-া জনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এসব রোগীর মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি।

কুড়িগ্রামে শীতের সঙ্গে বাড়ছে দুর্ভোগ: শৈত্যপ্রবাহ ও উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কুড়িগ্রামে তাপমাত্রার পারদ ক্রমেই নিচে নামছে। আর কনকনে ঠান্ডায় জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

শুক্রবার কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েকদিন ধরেই জেলার তাপমাত্রা ক্রমাগত নিচের দিকে নামছে। দিনের বেলা সূর্যের দেখা মিললেও তাতে কাক্সিক্ষত উষ্ণতা মিলছে না।

ফলে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই শীত জেঁকে বসছে উত্তরের এ জনপদে। আর রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত আরামদায় কাপড় না থাকায় তা অসহনীয় হড়ে পড়ছে নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য। অনেকে শীত নিবারণের চেষ্টায় খড়কুটো জ¦ালিয়ে তার পাশে বসছেন। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ত্রাণ শাখা সূত্রে জানা যায়, জেলার শীতার্ত মানুষের জন্য চলতি শীতে ৪১ হাজার ৯শ’ ১৪টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এগুলো এরইমধ্যে বিতরণের জন্য জেলার ৯টি উপজেলায় পাঠানো হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!