উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন বাংলাদেশের

ডেস্ক রিপোর্ট : চলতি বছর স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। নির্বাচনি বছর হলেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির রেকর্ড হয়েছে ৮ ভাগের কাছাকাছি। বেড়েছে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্সের পরিমাণ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যাংক ঋণে সদের হার ৯ ভাগে নামিয়ে আনা হয় চলতি বছরেই। যদিও ফারমার্স ব্যাংকের অর্থ সঙ্কটের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুরো ব্যাংক খাতে।

বছরের শুরুর দিকেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা- এ তিনটি সূচকেই ভাল অবস্থানের স্বীকৃতি পায় দেশ। সব ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অনুমোদন দেবে জাতিসংঘ।

নির্বাচনী বছর হলেও রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল থাকায় রেকর্ড ছাড়িয়েছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি। ৭ দশমিক ৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হলেও অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ ভাগ। কৃষি ও শিল্পখাতের ওপর ভর করেই এসেছে এই সাফল্য।

বিদায়ী ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে রপ্তানি আয় বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি ডলার। এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৭০৭ কোটি ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি।

গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরে শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছর ১১ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৪৩৩ কোটি ডলার। আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১৩৫২ কোটি ডলার।

রাজস্ব আয়ে তেমন প্রবৃদ্ধি আসেনি। অর্থবছরের পাঁচ মাসেই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব বোর্ডের হিসেবে হিসাবে, ৫ মাসের প্রবৃদ্ধি পাঁচ দশমিক আট চার ভাগ। অথচ গত অর্থবছরে একই সময়ে যা ছিল প্রায় ১৮ ভাগ।

বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশে তেমন উন্নতি হয়নি। অক্টোবরে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ইজ অব ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট অনুযায়ী, এ বছর ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৬ তম। এক বছরের ব্যবধানে মাত্র এক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।

বছরজুড়েই আলোচনায় ছিলো ব্যাংক খাত। বছরের শুরুতেই আমানত সংকটে গ্রাহকের অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হয় ফারমার্স ব্যাংক। যার প্রভাব পড়ে পুরো ব্যাংক খাতে। এদিকে, এপ্রিল মাসে ব্যাংক সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার নিদের্শ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে জুন মাসে ঋণ বিতরণে সুদের হার ৯ ভাগ ও আমানতে ৬ ভাগ ঠিক করে দেয় ব্যাংক মালিকরা। তবে সব ব্যাংক এখনো এ সুদহার কার্যকর করেনি। যদিও ব্যাংক মালিক ও প্রধান নির্বাহীদের অনুরোধে করপোরেট করহার ও সিআরআর কমিয়ে আনে সরকার।

একদিন পরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নতুন সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!