একখন্ড বাংলাদেশ
আয়শা আহমেদ
প্রিয় বঙ্গবন্ধু,
আমি আপনার বুকের জমিনে বেড়ে ওঠা ভূখন্ডে লালিত একটি ফুল বলছি। অথবা ধরে নিন, আপনার দেখা স্বাধীন আকাশের স্বপ্নে বিভোর একটি পাখি। আমার পরিচয় যাই হোক, আমি আপনার উত্তরাধিকার। যে পতাকা বুকে ধরেছেন আপনি, সেই একই পতাকার টিপ আমি ললাটে আঁকি। একই মানচিত্রের মাপে আমাদের হৃদয়। সেই অধিকারবোধ থেকেই, আজ আমি আপনার কাছে অভিমান-অভিযোগ আর অব্যক্ত আক্ষেপের ঝাঁপি নিয়ে এসেছি। -যেই ভূখ-ে আপনি মেরুদ- টান টান করে হেঁটে বেড়িয়েছেন, যেই ভূখ-ের মাটিতে আপনার মতো পুরুষের সিঁথান; সেই উর্বরা ভূখ-ের উত্তরসূরী জাঁতি এমন অমেরুদ-ী-কাপুরুষ হয়ে যাবে কেন? আপনি তো আমার নামে এনে দিয়ে গেছেন স্বাধীনতার সুনীল আকাশ। ওরা আমার ডানায় এমন ভয়ের শেকল বাঁধতে আসে কেন? আপনি জানেন? আপনার সোনার বাংলার অসুখ ভীষণ। শিশু থেকে বৃদ্ধা কেউই এখানে আর নিরাপদ নয়। রোজ রোজ ধর্ষিতা হচ্ছে জ¦লজ্যান্ত বাংলাদেশ। বাড়ছে হিসেব, লজ্জার! ওদের আঁচল মোছা কান্নাটুকুর সাথে, আপনারও কি স্বপ্ন পুড়ে নষ্ট হয়? নিথর চোখে তাকিয়ে থাকেন? আমার মতোন, ক্রোধের তোড়ে বুকের বাঁয়ে কষ্ট হয়? নেতা, আমি আহত রাষ্ট্র। আমি আপনার ক্ষতবিক্ষত বুকের বাহক, আপনার হৃদপি-ের দগদগে ঘা। আপনার অদৃশ্য দীর্ঘশ্বাস এবং নিস্ফল রাষ্ট্রীয় আইন, আমিই। আপনাকে মিস করি খুব। আমার প্রত্যেকটি অপারগতা, প্রত্যেকটি পরাজয়, প্রত্যেকটি সীমাবদ্ধতা আপনাকে মিস করে খুব। প্রতিটি অনিরাপদ নাগরিক, প্রতিটি অমীমাংসিত রায়, ধুঁকতে থাকা সুন্দরবন আপনাকে মিস করে খুব। আমাদের আপনাকে প্রয়োজন ভীষণ! আপনি হয়ে উঠার জাদুটুকু, মাতৃভূমির কান্না মোছার মন্ত্রটুকু, আমাকে বলে দেবেন, প্লিজ? কিংবা- কোনো এক নাগরিকের ছদ্মবেশে, আর একটা বার ফিরে আসবেন, প্লিজ! বাংলাদেশ আপনাকে মিস করে খুব! .
ইতি,
একখন্ড বাংলাদেশ
আয়শা আহমেদ