ঐতিহ্যের দেশ উজবেকিস্তানে ইসলাম
ধর্মপাতা: উজবেকিস্তান মধ্য এশিয়ার একটি বৃহৎ প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ১৯২৪ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৯১ সালের ৫ ডিসেম্বর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
রুক্ষ ও শুষ্ক দিগন্ত বিস্তৃতি মরুভূমি এবং বড় বড় পাহাড়-পর্বত আর এ দেশের বিশাল অংশ দখল করে আছে। উজবেকিস্তানে বৃষ্টিপাত তেমন একটা হয় না। গরমকালে উত্তাপ বহু গুণে বেড়ে যায়, আর শীতের মৌসুমে শূন্যের বেশ নিচে নেমে আসে পারদ।
সিআইএর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী উজবেকিস্তানের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রধান ধর্ম ইসলাম। মোট জনসংখ্যা ২ কোটি ৯৪ লাখ ৭৩ হাজার ৬১৪ (জুলাই, ২০১৭)। মুসলিম ৮৮%, ইস্টার্ন অর্থডক্স ৯ শতাংশ ও অন্যান্য ৩ শতাংশ।
৩০ হিজরিতে হজরত ওসমান (রা.)-এর আমলে আহনাফ বিন কায়েস (রা.) এ অঞ্চলে ইসলাম-প্রচার অভিযানে আসেন এবং পারস্য বিজয়ের পর উজবেকিস্তানে মৌলিকভাবে ইসলামের আগমন হয়।
আব্বাসি যুগের খলিফা মুতাসিম বিল্লাহর শাসনামলে উজবেকিস্তানের বহু গোত্র ইসলামের ছায়াতলে আসে। উমাইয়াদের যুগে ৮৮ হিজরিতে পুরো উজবেকিস্তান মুসলমানদের অধীনে চলে আসে। মুসলিম বিশ্বের আলেকজান্ডারখ্যাত কুতাইবা ইবনে মুসলিম (র.) ছিলেন সে সাফল্যের অগ্রনায়ক।
রাষ্ট্রীয় ভাষা উজবেক হলেও মুসলমানরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরবি ও ফার্সি ভাষা ব্যবহার করে। আরবি বর্ণে একসময় উজবেক ভাষা লেখা হতো। পর ইতিহাসের চড়াই-উৎরাইয়ে তাতে পরিবর্তন আসে।
উজবেকিস্তানে প্রচুর ইসলামি ঐতিহাসিক মসজিদ, স্থাপনা ও প্রাচীন সমাধি রয়েছে। ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ইচান কালা কমপ্লেক্স (ওপযধহ কধষধ ঈড়সঢ়ষবী), বিখ্যাত বিবি খানম মসজিদ, কালটা মিনার, মহম্মদ আমিন খান মাদ্রাসা, জুমা মসজিদ, বোরগাজি খান মাদ্রাসা, ইসলাম খোজা মাদ্রাসা ও মিনার, তাসখাউনি, হারেম ও পাহাড়ের গায়ে অনেক প্রাচীন সমাধি। প্রাচীনকালে খিভার শাসকদের বাসস্থান ছিল কুনয়া অর্ক (কঁহুধ অৎশ) ইত্যাদি অন্যতম।
কিছুদিন আগে প্রকাশিত বিবিসি বাংলার তথ্য মতে, পর্যটনশিল্পের মাধ্যমে উজবেকিস্তান ‘দ্বিতীয় মক্কা’ হতে চায়। দেশটির সরকার মনে করে, দেশটির শতশত ধর্মীয় স্থাপনার মাধ্যমে বিদেশি পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করে তুলে ধরা সম্ভব।