কলম্বিয়ায় গাড়ি বোমা: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০
আর্ন্তজাতিক: কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ২০ জন হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শহরের দক্ষিণে একটি পুলিশ একাডেমিতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ বিস্ফোরণে আরও অন্তত ৬৮ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের বেশিরভাগই প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল ছেড়েছেন বলে জানায় বিবিসি। বিস্ফোরণের ধাক্কায় একাডেমির আশেপাশের কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্টের জানালার কাঁচ ভেঙ্গে যায়।
নিহতদের মধ্যে একুয়েডরের এক নারীও আছেন। এখন পর্যন্ত কেউ এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। বিস্ফোরণে নিহত গাড়ি চালকের নাম হোসে আলদেমার রোজা রদ্রিগুয়েজ। ৫৭ বছরের ওই ব্যক্তির অতীত অপরাধের কোনো রেকর্ড নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে বসবাস করতেন।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভান দুকে এ হামলাকে ‘পাগলাটে জঙ্গি হামলা’ বলে বর্ণনা করে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি ধূসর রঙের ‘নিশান পেট্রোল’ পুলিশ একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। চেকপোস্টে নিরাপত্তারক্ষীরা গাড়িটিকে থামাতে গেলে সেটি দ্রুতগতিতে এগিয়ে গিয়ে দেয়ালে ধাক্কা মেরে বিস্ফোরিত হয়। ছবিতে
একাডেমির সামনে ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাড়িও দেখা গেছে।
পুলিশ জানায়, গাড়িতে প্রায় ৮০ কেজি শক্তিশালী বিস্ফোরক ‘পেনটোলাইট’ ছিল। অতীতে দেশটির বামপন্থি রেভল্যুশনারী আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়া (ফার্ক) এ ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করতো।
কলম্বিয়া সরকার ও ফার্ক বিদ্রোহীদের মধ্যে দীর্ঘ লড়াইয়ে হরহামেশাই গাড়িবোমা হামলার ঘটনা ঘটতো।
কিন্তু গত ৯ বছরে এ ধরনের প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি বলে জানায় স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
কলম্বিয়ার ফার্ক বিদ্রোহীরা ২০১৬ সালের নভেম্বরেই সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি সই করেছে। তারপর থেকে দলটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়।
কিন্তু দেশটিতে আরেকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (ইএলএন) এখনও সক্রিয়। গাড়িচালক রদ্রিগুয়েজ যেখানে বসবাস করতেন সেখানেও ইএলএন বিদ্রোহীরা সক্রিয়।
তবে বৃহস্পতিবারের হামলার পেছনে ইএলএন বিদ্রোহীদের হাত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ফার্ক গেরিলাদের সঙ্গে ‘ঐতিহাসিক’ শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পাঁচ দশকের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন কলম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস।
ফার্ক নেতা পাস্তোর আলাপে এক টুইটে এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “রাজনৈতিকভাবে সংঘাত অবসানের বিরুদ্ধে উস্কানি দিতেই এই হামলা করা হয়েছে।”
ইএলএন’র সঙ্গে সরকারের শান্তি চুক্তির উদ্যোগ ভেস্তে দিতেই এ হামলা হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।