কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা, বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্বেগ
বিদেশ : সম্প্রতি তিন দফা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির দাবি, প্রতিবেশী দেশ জাপানের যেকোন স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম তাদের মিসাইল। এতে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা দেশটির একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা উদ্বিগ্ন করে তুলেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে। মহামারি শুরুর পর থেকেই নানা সংকটে ধুকছে অর্থনৈতিকভাবে নাজুক দেশ উত্তর কোরিয়া। পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, খাদ্যসংকটে থাকা দেশটিতে দেখা দিতে পারে দুর্ভিক্ষ। এমনকি সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনও স্বীকার করেন, খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া ঝড়-বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগও আঘাত হেনেছে দেশটিতে। তবে মুখে খাদ্য সমস্যার কথা বললেও কিম জং উনের সাম্প্রতিক কর্মকা- অবাক করার মতোই। নানামুখী সংকটের মধ্যেও তার সামরিক উচ্চাভিলাষ এতটুকু কমেনি। তার প্রমাণ মিলছে সম্প্রতি কয়েক দফা ব্যালিস্টিক ও ক্রজ মিসাইল পরীক্ষার মধ্য দিয়ে। এ ছাড়া ট্রেন থেকে ছোঁড়া যায় এমন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ছবিও প্রকাশ করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। আর এত সব কর্মকান্ডের জন্য কিমের জবাব একটাই, আত্মরক্ষার্থেই সমদ্ধ করা হচ্ছে অস্ত্রভা-ার। উত্তর কোরিয়ার ক্রজ মিসাইল ১৫শ’ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে। আর এই বিষয়টিই ভাবিয়ে তুলেছে আঞ্চলিক শক্তিগুলোসহ পশ্চিমা বিশ্বকে। আগেও ক্রজ মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। তবে, এবারেরটি দূরত্বের পাল্লায় টপকে গেছে আগের সবগুলোকে। ধারণা করা হচ্ছে, পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষমতা থাকতে পারে নতুন এই মিসাইলে। ক্রজ মিসাইলের আরেকটি বিশেষত্ব কখনো কখনো রাডারকে ফাঁকি দেয়ার ক্ষমতা। রাডারের ধরা পরলেও তা হয় একেবারে শেষ মুহূর্তে। এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশনের পরিচালক জানিয়েছেন, বেশ কিছু বছর বন্ধ থাকার পর ইয়ংবিয়ন পরমাণু কেন্দ্রে আবারো প্লুটোনিয়াম উৎপাদন শুরু করেছে পিয়ংইয়ং। এ অবস্থায় উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার পাল্টাপাল্টি সামরিক প্রদর্শনী নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিক বলেন, ‘কোরীয় উপদ্বীপে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে জাতিসংঘ উদ্বিগ্ন। আমাদের বিশ্বাস, আলোচনার পথ এখনো উন্মুক্ত। যা কোরীয় উপদ্বীপে স্থায়ী শান্তি আনবে।’