ক্যালিফোর্নিয়ায় কৃষ্ণাঙ্গের ঝুলন্ত লাশ, পুলিশের মন্তব্যে ক্ষোভ
বিদেশ : যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় এক কৃষাঙ্গের লাশ পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিয়ে পুলিশের মন্তব্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বুধবার স্থানীয় সময় ভোররাত প্রায় ৩টা ৪০ মিনিটে দিকে পামডেল শহরের সিটি হলের কাছাকাছি একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় ২৪ বছর বয়সী রবার্ট ফুলারের মৃতদেহ পাওয়া যায়।শহরটির এক বাসিন্দা ঘটনাস্থলের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় লাশটি দেখতে পান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ফুলারের মৃত্যু নিয়ে লস অ্যাঞ্জেলস কাউন্টি শেরিফের ডিপার্টমেন্টের (এলএএসডি) তদন্ত চলার মধ্যেই শুক্রবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক কমিউনিটি মিটিংয়ে পুলিশ ক্যাপ্টেন রন শ্যাফার ‘ফুলারের মৃত্যু আত্মহত্যা মনে হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন। এতে কমিউনিটির সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
তাদের বক্তব্য, ঘৃণাজনিত অপরাধও হতে পারে এমন একটি ঘটনা নিয়ে কর্তৃপক্ষ খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত টানছে। ২৫ মে মিনিয়াপোলিস শহরে পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রবল প্রতিবাদ চলছে। এরপর লস অ্যাঞ্জেলস শহর থেকে প্রায় ৩০ মাইল দূরে পামডেলে ফুলারের মৃত্যু নিয়ে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়ায় বর্ণবৈষম্য ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিরাজমান উত্তেজনা কতোটা তীব্র তা প্রকাশ পেয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ক্যাপ্টেন শ্যাফারের মন্তব্যে অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
কমিউনিটির শ্রোতা সদস্যরা ‘সত্য বল’ ও ‘শান্তি নাই’ শ্লোগান দিয়ে এর প্রতিবাদ জানায়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে যখন মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ করা যায়নি তখন এলএএসডি কেন এটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলছে তার ব্যাখ্যা দাবি করেন তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা ঘটনার পূর্ণ তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন। টুইটারে হ্যাশট্যাগ দিয়ে ‘জাস্টিস ফর রাবর্ট ফুলার’ দাবি তোলা হচ্ছে।
কিছু লোকের ধারণা ফুলারকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রেখে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। পামডেলের সিটি ম্যানেজার জে জে মার্ফি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ফুলারের মৃত্যু আাত্মহত্যা বলে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন। নিজের দাবির বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা না দিয়ে তিনি বলেছেন, “করোনাভাইরাস মহামারীর এ সময়ে সমাজের অনেক লোকই তীব্র মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন।”
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ তুলতে ফুলারের পরিবার ‘গোফান্ডমি’ নামে একটি পেইজ খুলেছে। শুক্রবার বিকালের মধ্যে ওই ফান্ডে এক লাখ ১০ হাজার ডলারেরও বেশি অর্থ জমা হয়েছে।