‘ক্রিপ্টো ব্রিজে’র মাধ্যমে পাচার হয়েছে ৫৪ কোটি ডলার
আইটি: গত দুই বছরে ক্রিপ্টো ব্রিজ নেটওয়ার্ক ‘রেনব্রিজ’ ব্যবহার করে অন্তত ৫৪ কোটি ডলার পাচার করেছে হ্যাকার ও প্রতারকরা। এই ক্রিপ্টো ব্রিজগুলোই সাইবার অপরাধীদের অসৎ পথে কামানো অর্থ পাচারের পথ সুগম করে দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। ক্রিপ্টো ব্রিজ মূলত এক ধরনের বিশেষায়িত সফটওয়্যার যার মাধ্যমে নিজের ক্রিপ্টো মুদ্রা এক ব্লকচেইন থেকে ভিন্ন ব্লকচেইনে পাঠানোর সুযোগ পান ক্রিপ্টো মুদ্রার মালিকরা। তেমনই একটি ক্রিপ্টো ব্রিজ সেবা ‘রেনব্রিজ’। ২০২০ সাল থেকে এই সেবাটির মাধ্যমে হ্যাকার ও প্রতারকদের ৫৪ কোটি ডলার অর্থ পাচার করার তথ্য উঠে এসেছে ব্লকচেইন বিশ্লেষক সংস্থা এলিপ্টিকের প্রতিবেদনে। এলিপ্টিক বলছে, বিকেন্দ্রীভূত ক্রস-চেইন নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির ঝুঁকিগুলোর উদাহরণ হিসেবে কাজ করছে রেনব্রিজ। রেনব্রিজের প্রচারণা চালানো হয় সহজে জিক্যাশ বা বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টো মুদ্রাকে ইথারে রূপান্তর করে ভিন্ন ব্লকচেইনে সরিয়ে নেওয়ার মাধ্যম হিসেবে। কিন্তু এলিপ্টিকের প্রতিবেদন বলছে, “লেনদেনের বৈধ মাধ্যমের পাশাপাশি অর্থ পাচারের মূল সুযোগদাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ক্রস-চেইন ব্রিজগুলো।” এগুলো ব্যবহারকারীদের বাজার নিয়ন্ত্রকদের চোখ এড়িয়ে সহজে অর্থ এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে সরিয়ে নিতে দিচ্ছে এবং এর মধ্যে র্যানসমওয়্যার হামলা ও হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরি করা অর্থও আছে বলে উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে। ক্রিপ্টো মুদ্রার লেনদেন অনুসরণ করা কঠিন হলেও, অসম্ভব নয়। অর্থের উৎস সহজেই লুকিয়ে ফেলার সুযোগ আছে এই প্রযুক্তিতে। সপ্তাহের শুরুতেই ‘টর্নেডো ক্যাশ’-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। ক্রিপ্টো মুদ্রার উৎস লুকিয়ে ফেলার সেবা দিত এই প্ল্যাটফর্মটি। মে মাসে ‘ব্লেন্ডার ডটআইও’ নামের আরেকটি প্ল্যাটফর্মের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল মার্কিন কর্তৃপক্ষ। উভয় প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের অর্থ পাচারে সহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে ওয়াশিংটন। এলিপ্টিকের প্রতিবেদন বলছে, জাপানের ‘লিকুইড’ ক্রিপ্টো নেটওয়ার্ক হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরি করা অর্থ পাচারে রেনব্রিজ ব্যবহারের ইঙ্গিত মিলেছে। ওই হ্যাকিংয়ের ঘটনার সঙ্গেও উত্তর কোরিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে সন্দেহ সাইবার নিরাপত্তা গবেষকদের। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, রাশিয়াভিত্তিক হ্যাকার ও র্যানসমওয়্যার হামলাকারীদের কাছে আলাদা কদর আছে রেনব্রিজের। র্যানসমওয়্যার হামলায় মুক্তিপণ হিসেবে নেওয়া ১৫ কোটি ডলারের বেশি অর্থ পাচার করা হয়েছে রেনব্রিজের মাধ্যমে।