গ্রাম্য সালিশে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা
বিশেষ প্রতিনিধি: শাহজাদপুরে পরকিয়া প্রেমিককে আটক করে অমানুষিক নির্যাতন। হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
শাহজাদপুরে পরকিয়া প্রেমিককে আটক করে অমানুষিক নির্যাতন। হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
গ্রাম্য শালিসে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করলেন ইউপি সদস্য মোঃ আজিজ, সাবেক মেম্বর মোঃ মোস্তফা ও মাতব্বর মোঃ শহীদ আলী।
জানা যায়, গত মঙ্গল বার গভীর রাতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের ঘোরষাল মধ্যে পাড়া গ্রামের মোঃ মকবুল প্রামানিকের মালায়েশিয়া প্রবাসি পুত্র মোঃ আল-আমিন (৪০) এর স্ত্রী মোছাঃ মর্জিনা খাতুন (৩৫) এর ঘরে পরকিয়া প্রেমিক পার্শ্ববর্তী ঘোরষাল উত্তর পাড়া গ্রামের মোঃ জলিল সরকারের পুত্র মোঃ জাহাঙ্গীর প্রবেশ করে। পরে প্রবাসী আল-আমিনের ভাবী মোছাঃ হাজরা বেগম বিষয়টি বুঝতে পেরে বাড়ির সবাই ডেকে পরকিয়া প্রেমিক জাহাঙ্গীর ও প্রেমিকা মর্জিনাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং প্রবাসী আলআমিনের বড় ভাই মোঃ নবীয়ালের নেতৃত্বে পরকিয়া প্রেমিক জাহাঙ্গীর কে বেধে বেধরক মারপিট করে।
বিষয়টি জানাজানি হলে ঐ গ্রামের মেম্বর মোঃ আজিজ, সাবেক মেম্বর মোঃ মোস্তফা ও মাতব্বর মোঃ শহীদ বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে না জানিয়ে আইন লঙ্ঘন করে বুধবার বিকেলে একটি গ্রাম্য শালিসে জাহাঙ্গীরের নিকট হতে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে মর্জিনাকে জোর করে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে ঘটনাটি মিমাংশা করে দেয়।
এ ঘটনায় আহত পরকিয়া প্রেমিক জাহাঙ্গীরকে গুরতর অবস্থায় পার্শ্ববরতী এনায়েতপুর জনতা ক্লীনিকে ভর্তী করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঐ এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আজিজ, সাবেক মেম্বর মোস্তফা ও মাতব্বর আজিজের সাথে যোগাযোগের জন্য তাদের বাড়ীতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলে মাতব্বর শহিদ আলী বলেন, গ্রামের ১০ জন মিলে যেটা করে সেটা আইনও মেনে নেয়। আর শালিসের আগে থানার লোককে জানিয়েই শালিস করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা গ্রামে বসবাস করি। এত কিছু বুঝি না। আপনি বর্তমান মেম্বরের সাথে যোগাযোগ করেন।
এলাকাবাসী বলেন, মেম্বর এবং সাথে থাকা দুই মাতব্বর এমন অমানবিক বিচার করতে পারেন না। তারা কি আইনের উর্ধ্বে নাকি? মেম্বর ও মাতব্বররা নিজেরা অমানবিক বিচার না করে থানা পুলিশের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়ায় এর ব্যাবস্থা নিতে পারতো।
এ ব্যাপারে, শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, কাউকে আটক করে বেধে রেখে মারপিট করা, শারিরীক নির্যাতন করা আইনসম্মত নয়। আইনের দৃষ্টিতে এটা অন্যায়। কেউ এমন করে থাকলে নির্যাতিতরা যদি আইনের সহযোগীতা নেয় অবস্যই আমরা আইনি ব্যাবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।