ঘাটগুলোতে ঢাকামুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড়
ডেস্ক: প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে জীবিকার তাগিদে ফেরি ঘাটগুলো দিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফিরছে হাজার হাজার যাত্রী। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকায় ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল চোখে পড়ার মতো। ঘাটে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে কাজ করছে পুলিশ।
এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে দৌলতদিয়ায় আসছেন যাত্রীরা। যাত্রীরা বলছেন, চাকরি বাঁচাতে করোনা ঝুঁকি নিয়ে তারা ঢাকায় যাচ্ছেন। সড়কে গণপরিবহন না থাকায় নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। বাড়তি ভাড়াও গুনতে হচ্ছে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান জানান, ঈদে যারা বাড়িতে এসেছিলেন তারা আবার ঢাকায় ফিরছেন। যে কারণে দৌলতদিয়া যাত্রী ও ছোট গাড়ির চাপ রয়েছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে কাজ পুলিশ করছে। এ নৌ রুটে ফেরি বাড়াতে বিআইডব্লিউটিসিকে অনুরোধ করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি কতৃপক্ষ জানায়, এই রুটে ছোটবড় ১৪টি ফেরি রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।
মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে হাজারো যাত্রী আসছে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে। এ নৌরুটে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ১২টি ফেরি চলাচল করছে। সব ফেরিতে যানবাহনের পাশাপাশি প্রচুর যাত্রীদের আসতে দেখা যায়। ঢাকামুখী এসব যাত্রীরা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেও ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা পার হচ্ছেন।
শিমুলিয়া ঘাটে আসার পর গণপরিবহণ বন্ধ দেখে কয়েকগুণ বেশি ভাড়ায় মিশুক, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে করে নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছেন। কাউকে দেখা যাচ্ছে পণ্যবাহী পিকআপভ্যানে করেও গন্তব্যে যেতে। বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, ভোর থেকে ৪টি রো রোসহ ১২টি ফেরি চলাচল করছে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে।
কাঁঠালবাড়ি ঘাটে চাপ বেশি। এ পর্যন্ত কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে হাজার খানেক যানবাহন শিমুলিয়া ঘাটে এসেছে। শিমুলিয়া ঘাট থেকে কাঁঠালবাড়ি মুখে যাত্রীর চাপ নেই। কিছু প্রাইভেটকার ও ছোট যান আছে। তবে ফেরির জন্য তাদের ঘাটে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না। শিমুলিয়া ঘাটে গাড়ি সচল রয়েছে।
এদিকে, ৩১ মে থেকে সরকারি অফিস-আদালত খোলা থাকার কারণে ঈদ উযাপন শেষে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঢাকামুখী মানুষের চাপ বাড়ছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে। কিন্তু পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে পাটুরিয়া অংশের ৪টি পন্টুনের মধ্যে দু’টি সচল আছে। অন্য দু’টি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে পাটুরিয়ায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটের সর্বশেষ তথ্য নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা সেক্টরের ডিজিএম জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে পাটুরিয়া পয়েন্টের ৪টি পন্টুনের মধ্যে ৪ ও ৫ নম্বর পানিতে তলিয়ে গেছে।
পন্টুনগুলো লো-পয়েন্ট থেকে উঠিয়ে মিট পয়েন্টে স্থানান্তরের কাজ চলছে। বাকি ২ ও ৩ নম্বর পন্টুন দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। এ ছাড়া ৩১ মে থেকে সরকারি অফিস-আদালত যেহেতু খোলা রয়েছে, সেজন্য ঘাটে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ কিছুটা রয়েছে। সেটা বিবেচনা করে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ১০টি ফেরি দিয়ে নৌপথে সেবা দেওয়া হচ্ছে।