চীনের নিরাপত্তা আইনের নিন্দায় যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদেশগুলো

বিদেশ : চীনের হংকং নিরাপত্তা আইন নিয়ে নতুন করে তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ এর মিত্রদেশ যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। তাদের কথায়, বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে হংকংয়ে এ নতুন আইন চাপিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়ে চীন বিভিন্ন দেশের সরকারের আস্থা ক্ষুন্ন করা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ব্যাহত করার ঝুঁকি নিচ্ছে।

তবে চীন এই সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছে। চীনের পার্লামেন্ট হংকংয়ে সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালুর বিল বৃহস্পতিবার অনুমোদন করেছে। চীন বলছে, গতবছর টানা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ-সংঘর্ষে উত্তাল হংকংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, বৈধ সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা, সন্ত্রাসবাদ ও বিদেশি হস্তক্ষেপ রুখতে এ নিরাপত্তা আইন জরুরি হয়ে পড়েছিল।

অন্যদিকে সমালোচকরা বলছেন, গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীদের কণ্ঠরোধ করতেই চীন এখন এ ধরনের নিপীড়নমূলক আইন চাপাচ্ছে। হংকং গত রোববার থেকেই আইনটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বলেছেন, হংকংয়ের এ পরিস্থিতিই বলছে যে, তারা আর চীনের কাছ থেকে উচ্চ মাত্রার স্বায়ত্তশাসন সুবিধা ভোগ করছে না।

চীন হংকংকে নিজেদের মতোই বানাতে চাইছে এটি এখন স্পষ্ট। বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্রদেশগুলো এক বিবৃতিতে বলেছে, বেইজিং সরাসরি আইনটি চাপিয়ে দিলে হংকংয়ের মানুষের স্বাধীনতা সীমিত হয়ে পড়বে, স্বায়ত্তশাসন থাকবে না, ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতিও ক্ষুন্ন হবে।

বারবার বিক্ষোভ-সংঘর্ষ উত্তাল হয়ে ওঠা হংকংয়ে নতুন এ আইন বিভেদও বাড়াতে পারে বলে বিবৃতিতে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে দেশগুলো।বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, “হংকংয়ের মানুষকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদেরকে নিজ নিজ অধিকার এবং স্বাধীনতা ভোগ করতে দিয়ে সমাজে আবার আস্থা ফিরিয়ে আনাই সেখানে গতবছর থেকে চলে আসা বিক্ষোভ-উত্তেজনা প্রশমনের একমাত্র পথ।”

একথা মাথায় রেখে চীনকে হংকং সরকার এবং জনগণের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে ‘পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য’ একটি পথ খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদেশগুলো। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে জাপান ‘হংকং নিরাপত্তা আইন’ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, ‘হংকং খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার’।

ফলে সেখানে গণতন্ত্র এবং স্থিতিশীলতা বজায় থাকা জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরাপত্তা আইনের ফলে হংকংয়ে কেউ বেইজিংয়ের সমালোচনা করলেও তার সাজা হতে পারে- যেমনটি হয়ে থাকে চীনা মূল ভুখন্ডে ।

তবে হংকংয়ের নেতা ক্যারি লাম বরাবরই দাবি করে আসছেন যে, এ আইন বাসিন্দাদের অধিকার ক্ষুন্ন করবে না। ওদিকে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনাকে অত্যন্ত ঔদ্ধত্যপূর্ণ, অযৌক্তিক এবং নির্লজ্জ বলে বর্ণনা করেছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!