ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন কারী ঈশ্বরদীর সেই প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ : বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের
নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ঈশ্বরদীর সেই প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক ২ মাস কারাভোগের পর জানি পেয়ে পুনরায় স্কুলে ফিরে আসার প্রতিবাদে এবং তার শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত এই প্রধান শিক্ষক পুনরায় স্কুলে এলে শিক্ষার্থীরা স্কুল বর্জন করবে বলে ঘোষনা দিয়ে ক্লাস না করে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল করে।
বুধবার সকালে ঈশ্বরদীর আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস্ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের আইকে রোডে আগুন ধরিয়ে ও কলাগাছ কেটে ফেলে ১ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে রাখে তারা। এসময় উভয় পাড়ে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভরত স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানায়, আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস্ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, শ্ল¬ীলতাহানীসহ নানান অনৈতিক কর্মকান্ড করে প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক এই স্কুলের সুনাম চরমভাবে ক্ষুন্ন করেছেন। তিনি ফের এই স্কুলে এলে শিক্ষার্থীরা একযোগে স্কুল বর্জন করবে বলে ঘোষণা দেয়। বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণী ‘খ’ শাখার এক ছাত্রী পুলিশের নিকট লিখিত অভিযোগ করে জানায়, গত ২৫ মে দুপুরে স্কুল মাঠে সে সহ তার কয়েকজন বান্ধবীদের সঙ্গে খেলছিলো। সে সময় প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক ওই ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে তাকে বিভিন্ন ধরনের অশ্লি¬¬ল ও আপত্তিকর কথাবার্তা বলে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্ল¬ীলতাহানী করে। পরে তার বান্ধবীরা এগিয়ে এলে প্রধান শিক্ষক তাকে ছেড়ে দিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে জোর চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হলে অবশেষে ওই ছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি যৌন হয়রানীর মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় অভিযুক্ত সেই প্রধান শিক্ষককে গত ১৭ জুন ঢাকার শাহাবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, ঈশ্বরদী থানার পুলিশ সদস্যরা ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে ঈশ্বরদীতে নিয়ে আসে। পরে ওই প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুন্নাহার শরীফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এদিকে জামিনে মুক্ত হয়ে মঙ্গলবার অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসেন। তাকে গ্রেফতার করার দাবিতে ড়বুধবার বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে ও কলা গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করে আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।