দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল হামিদের শেষ স্মৃতি চিহ্নের
ই রনি, পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার শানিরদিয়ার গ্রাম বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ স্মৃতির এক করুন ইতিহাসের পটভূমি । সে দিন ২৭ নভেম্বর ১৯৭১ ভোর রাত থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুলের নেতৃত্বে শানিরদিয়ার স্কুল এলাকায় আলবদর বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধ চলছে। দুপুর বারোটার দিকে হানাদার বাহিনী আলবদরদের সাহায্য করতে বিপুলসংখ্যক সেনা একযোগে আক্রমণ করে। আক্রমণের তোরে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। সম্মুখ সমরে সেইদিন আনুমানিক সাত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। একটি গুলি এসে লাগে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদের হাঁটুতে।
গুলি লেগে হাটুর মালই ছিরে যায়, তখন সহযোদ্ধারা তার পা বেধে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে ঈশ্বরদী থানাধীন – চড় গড়গড়ি মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন ও পানসেরের আস্রয়ে রাখেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সেই গ্রামে ঢুকে গ্রাম পুড়িয়ে দেয়। এসময় গ্রাম বাসি আতঙ্কে পালিয়ে যায়। সহযোদ্ধারা যখন পালাতে প্রস্তুত তখন তিনি আহত অবস্থায় কোথাও যেতে অস্বীকৃতি জানান।
তিনি বলেন তোমরা পালিয়ে যাও আমাকে একটা এস এম জি আর কিছু গুলি দিয়ে যাও আমি এখান থেকেই ওদেরকে মারব প্রয়োজনে শহীদ হয়ে যাব। কিন্তু প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ার কারনে ক্রমশ দূর্বল হয়ে গেলে গুলি চালানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। অবশেষে ঘর থেকে বেড় হতে না পারলে হানাদারদের দেয়া আগুনে পুড়ে ঐ ঘরেই তিনি শহীদ হন। সেই মহান মুক্তিযোদ্ধা তার ও আরেক জন মুক্তিযোদ্ধা ডিলু এর যৌথ নামে পাবনা ডিসি রোডে হামিদ দিলু ক্লাব প্রতিষ্ঠিত।
১৯৮৬ সালে তার সহযোদ্ধা যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা তারিকুল আলম নিলু পাবনা সদরের হেমায়েতপুরের ইউ পি চেয়ারম্যান হবার পর হামিদ সহ আরো তিন বীর মুক্তিযোদ্ধার গ্রামবাসীর সহযোগিতায় কবরের স্থান চিহ্নিত করে নিজস্ব ফান্ড থেকে বাঁধিয়ে দেন।
৩৩ বছর পরে আজ তার শেষ স্মৃতি চিহ্ন যেটা বর্তমানে নাজুক অবস্থায় আছে। স্থানীয় মানুষ মাটি কেটে যে অবস্থা তাতে যেকোনো মুহূর্তে ধ্বসে পড়তে পারে। মুছে যেতে পারে সেই বীরের কবরের চিহ্ন টুক। তাই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কবরটি সংস্কার করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রজন্মকে জানাতে সরকারের পদক্ষেপ নেয়া জরুরি বলে মনে করে সর্বস্তরের স্বাধীনতাকামী মানুষ ।
4 Attachments
Spread the love