নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বেতার ও টেলিভিশন ভাষণে তিনি এ তফসিল ঘোষণা করেন। সিইসি কে এম নুরুল হুদার এই ভাষণ বেতার ও টেলিভিশনে একযোগে সম্প্রচার করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৩ ডিসেম্বর হবে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৯ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২২ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর। এর ২৪ দিন পর হবে ভোটগ্রহণ। একাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পাশাপাশি গতকাল জেলা পর্যায়ে মনোনয়নপত্রসহ নির্বাচনসামগ্রী পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সব জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে এসংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতির অন্যতম একটি কাজ মনোনয়নপত্র বিতরণ। তফসিল ঘোষণার পর থেকে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন আগ্রহীরা।
গত ১ নভেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের জোটগুলোর সংলাপের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক করে। বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ও জোট বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণার পক্ষে সমর্থন দেয়। তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশন সকালে বৈঠক করে বিস্তারিত সময়সূচি চূড়ান্ত করে। সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণার পর আজ শুক্রবার থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হচ্ছে। এর ভেতর দিয়ে দেশে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে গেল।
নির্বাচন যেকোনো দেশেরই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অংশ। সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন শুধু যে গ্রহণযোগ্যতা পায় তা নয়, গণতন্ত্রের সৌন্দর্যও বিকশিত হয়। নিজেদের জনসাধারণের কাছে নিয়ে যাওয়ার বড় উৎসব বলা যেতে পারে নির্বাচনকে। আর সে কারণে এই গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় অংশ নেওয়া দেশের সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হিসেবেই বিবেচিত হতে পারে। দেশের সংবিধানের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। নির্বাচন প্রতিরোধের নামে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি কোনোভাবেই কাম্য নয়। কোনো ধরনের সহিংসতাও কাম্য নয়।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও আলোচনার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়নি। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও সেই ইঙ্গিত রয়েছে। আলাপ-আলোচনার ভেতর দিয়েই হয়তো বেরিয়ে আসবে সমাধান। কেটে যাবে অচলাবস্থা। আমরা আশা করব, সব রাজনৈতিক দল সদিচ্ছা ও সুবিবেচনার পরিচয় দেবে। এতে কেটে যাবে সব রাজনৈতিক সংকট। আজ থেকে নির্বাচন কমিশনকে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা। কোনো ধরনের সহিংসতা ঘটতে দেওয়া যাবে না। বিশেষ করে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা যেকোনো মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!