পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয় বিপদৎসীমার ৮ সে:মি: ওপর দিয়ে প্রবাহিত ; নিমাঞ্চল প্লাবিত
আফ্রিদী মিঠুন : পাবনার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার পানি। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ঈশ^রদী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের দশটি গ্রামের নিমাঞ্চলের মানুষ। ডুবে গেছে শীতকালীন সবজি সহ বিভিন্ন ফসল। তবে কিছুদিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা।
গত ২৪ ঘন্টায় পাবনার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বেড়েছে ১০ সেন্টিমিটার। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির কারণে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে নিচু এলাকার চরাঞ্চলে। এসব এলাকার গবাদি পশু নিয়ে পড়তে হয়েছে বিপাকে। অনেকে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু এলাকার স্বজনদের বাড়িতে।
কদিন পড়েই বাজারে উঠত ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের এসব চরের আখ, ফুলকপি, গাজর, মাষকলাই, মুলা, বেগুন, শিম, কাঁচা মরিচ, ধান করলাসহ আগাম শীতের সব্জি ও ফসল। পদ্মার এসব চরের উর্বর জমিতে সবজি ভাল উৎপাদন ও সচরাচর বন্যায় প্লাবিত না হওয়ায়, বর্গাচাষীরা এসব জমিতে চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ করেন। আকস্মিক বন্যায় সমস্ত ফসল নষ্ট হওয়ায় এখন সব হারিয়ে দিশেহারা চরকুড়–লিয়া, চরদাদাপুর, শান্তিনগর, মালপাড়া, উদিপাড়াসহ ১০ গ্রামের চাষীরা।
এদিকে সাঁড়া ইউনিয়নের সাঁড়া, গোপালপুর, ছোটগ্রাম, বড়গ্রাম এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ পানি ছুঁই ছুঁই। দু’ এক জায়গায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে গ্রামের মধ্যে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাল হক রানা সরদার বলেন, প্রতিদিনই পদ্মায় পানি বাড়ছে। এরই মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে গ্রামের মধ্যে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে দুই তিন দিনের মধ্যে ৫ থেকে ৭টি গ্রাম পানিতে তলিযে যাবে।
স্থানীয়রা আরো জানায়, পদ্মাপাড়ের অনেক গ্রামের বসত বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় পানিবন্দি অবস্থায় দূর্ভোগে পড়েছেন কয়েক শতাধিক পরিবার। খাবার, পানীয় জল ও গো খাদ্য সংকটে গবাদি পশু ও পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। অনেকে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু এলাকার স্বজনদের বাড়িতে।
স্থানীয়রা আরো জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি আগাম বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া হত তাহলে তাদের এত বেশী ক্ষতি হতো না।
তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় যথেষ্ঠ প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানালেন জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ। তিনি বলে, আগামী আরো কয়েকদিন পদ্মার পানি প্রতিদিন ১০ সেন্টিমিটার করে বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে তিনি।
তবে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, পানি বাড়লেও ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা নেই। কিছুদিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উজানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে এই পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
উল্লেখ, দীর্ঘ ১৬ বছর পর বিপদসীমা অতিক্রম করলো। সর্বশেষ ২০০৩ সালে এই পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল।