পাকিস্তানে চলছে ভয়াবহ বন্যার তান্ডব
বিদেশ: পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যার তান্ডব অব্যাহত। ইতোমধ্যে বন্যায় দেশটিতে এক হাজার ৩০০ জনের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, বিপর্যয়কর বন্যার কারণে ত্রাণ, পুনরুদ্ধার এবং পুনর্বাসনের জন্য পাকিস্তানে ব্যাপক আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন। পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যার কারণে পাকিস্তানের প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দেশটিতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। জিও নিউজ বলছে, বন্যায় প্রায় ২০ লাখ বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছে। ৭ হাজার কিলোমিটার রাস্তা প্লাবিত হয়েছে এবং ২৫৬ ব্রিজ ধ্বংস হয়েছে। বন্যাকবলিত সিন্ধু, বেলুচিস্তান, দক্ষিণ পাঞ্জাবের মানুষ বন্যার কারণে সৃষ্ট রোগে মরতে শুরু করেছে। দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এসব এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে সরকারকে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। পাকিস্তান ইসলামিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (পিআইএমএ) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মুহাম্মদ তাহির বলেন, পাকিস্তানের বন্যা কবলিত এলাকায় ইতোমধ্যেই গুরুতর চিকিৎসা সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে লোকেরা রোগে ও ক্ষুধায় মারা যাচ্ছেন। সরকারের উচিত শিগগিরই সেখানে জরুরি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঘোষণা করা। এসব এলাকায় তিনি ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠানের আহ্বান জানান। এ ছাড়া রোগের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে একটি জাতীয় নীতি প্রণয়নে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল গঠন করার আহ্বানও জানান মুহাম্মদ তাহির। এর আগে পাকিস্তানের এক মন্ত্রী জানান, বন্যায় পাকিস্তানের এক তৃতীয়াংশ পানির নিচে। আয়াজ আলি নামে পাকিস্তানের এক নাগরিক যার গ্রাম ৭ মিটার বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, এখন কেউ জানে না তাদের গ্রাম কই। এমন কেউ নেই যারা তাদের গ্রামকে আর চিনতে পারছেন। পাকিস্তান ভিত্তিক মানবিক সংস্থা আলখিদমত ফাউন্ডেশনের এক কর্মকর্তা মুহাম্মাদ ইকবাল বলেন, এই মুহূর্তে খাবার পানি এবং টয়লেট সুবিধার ভীষণ দরকার। এদিকে বন্যার কারণে পাকিস্তানে নিত্যপণের দামও আকাশচুম্বী। এ কারণে আরও দিশেহারা দেশটির মানুষ। চরম অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে থাকা দেশটির সামনে আরও কঠিন দিন আসছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।