পাবনায় ঋণ খেলাপির মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ১২ আসামীসহ ৩৭ কৃষকের জামিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : পাবনায় চা ল্যকর ঋণ খেলাপি মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ১২জন আসামীসহ ৩৭ কৃষকের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় মামলা করা হয়েছে বলছেন ব্যাংক কর্মকর্তা আর আইনজীবিরা বলছেন, অর্থ ঋণ আদালতের মামলা প্যানেল কোটে করার কোন সুযোগ নেই।
জানা গেছ, ২০১৬ সালে পাবনার ঈশ^রদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারি গ্রামের ৩৭ জন প্রান্তিক কৃষকের একটি গ্রুপকে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক জনপ্রতি ২৫ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করে। ঋণ খেলাপির দায়ে ২০২১ সালে ব্যাংকের পক্ষে তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নামে মামলা করেন। এই মামলা গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাংলা ৩৭ জন আসামীর মধ্যে ১২ জন কৃষককে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়।
মামলায় একাধিক কৃষক ও তাদের পরিবারের দাবি, ঋণ গ্রহণের পর এক বছরের মাথায় অধিকাংশ ঋণগ্রহীতা তাদের ঋণ পরিশোধ করেছেন। তার পাশ বই ও জমা স্লিপও রয়েছে। অথচ সেই অর্থ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জমা না করে আত্মসাৎ করেছেন। ফলে তাদের হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।
আসামী রজব আলীর স্ত্রী বুলিয়া খাতুন বলেন, ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম এক বছরের জন্য। লাভসহ ৩৩ হাজার ৭৮৬ টাকা পরিশোধ করেছি। ব্যাংক স্লিপও দিয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবং দুই বছর করনা কালিন সমম ও বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হয়ে যায় এজন্য তারা টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। এখন প্রাকৃত কৃষকদের টাকা পরিশোধ করার কোন ব্যবস্থা নেই।
তাদের দাবী অস্বিকার করে এই ব্যাংক কর্মকর্তার দাবী কৃষকরা ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলা করা হয়। খেলাপি ঋণ আদায়ে এটা চলমান প্রক্রিয়া বলছেন, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা। আর জেলা প্রশাসক বলছেন, কৃষকরা যেন হয়রানী না হয় সেজন্য তারা কাজ করছেন এবং তাদেরকে সহযোগীতার কথা বলছেন তিনি।
বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক এর তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক মামলার বাদী সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বলেন, দুই মাস আড়াই মাস পর পর বিভিন্ন ভাবে তাদের কাছে কাগজপত্র গিছে। হঠাৎ করেই তো ওয়ারেন্ট হয়নি। এই আগেও ওয়ারেন্টের জন্য দাবী করা হয় কিন্তু আদালত ওয়ারেন্ট দেননি। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরে ব্যদ্ধ হয়েই ওয়ারেন্ট করতে ব্যদ্ধ হয়েছে। স্টেটমেন্ট আদালতে পেরণ করা হয়েছে সেই আলোকেই তো মামলা হয়েছে।
পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসপন বলেন,  এটা প্রধানমন্ত্রীর নজরে গিছে। সে ব্যাপারে আমরা নির্দেশনা পেয়েছি যে, কৃষকরা যাতে কোন হয়রানী না হয়। তারা যে লোনটা নিয়েছিল কিভাবে মামলা হল এবং কেন মামলা হল সব বিষয়েই আমাদের খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য নির্দেশা দিয়েছে। আমরা সেসব বিষয়ে তথ্য নিচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা ব্যাংকের ম্যানেজার, সমবায় অফিসারসহ সবার সাথে কথা বলেছি। তারা কিভাবে লোনটা শোধ করতে পারে বিষয়টা জানব।
আসামী পক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব আহম্মেদ রিটন বলপন, আসামী পক্ষের আইনজীবি। (যেখানে প্রান্তিক কৃষক তারা তাদের ঋলের অধিকাংশ টাকাই পরিশোধ করেছে। এই মামলা প্যানেল কোটে ৪০৬, ৪২০ এই ধারায় মামলা করার আইনগত কোন সুযোগ নাই। এই মামলা করতে হবে অর্থ ঋণ আদালতে। আমরা বিজ্ঞ বিচারককে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। আমরা বলেছি কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। এই ছোট ছোট ঋণের মামলা করা এবং এই ভুলের কারণে আদালত সন্তুষ্ঠ হয়ে জামিন মুঞ্জুর করেছে।
এদিকে কৃষক বিরুদ্ধে মামলায় একটি সামাজিক সংগঠন জামিনে মুক্ত করতে এবং অর্থনৈতিক সব সহায়তা প্রদান করছে।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!