পাবনা-৩ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন দৌড়ে এক ডজন নেতা মাঠে : বিএনপির ৬ জন
এসএম শোফাজ্জল হোসেন বাবু: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন লাভে পাবনা-৩ এলাকার (চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর) নির্বাচনী এলাকার গ্রাম-গঞ্জের তৃণমুল নেতা কর্মী ও দলীয় সমর্থকদের সাথে পরিচিতি ও কুশল বিনিময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ এলাকার আওয়ামীলীগের অন্তত এক ডজন নেতা। শুধু কুশল বিনিময় নয় তারা এই পাবনা-৩ এলাকার উন্নয়নে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসব এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে বিভিন্ন উপলক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা উপস্থিত হয়ে নিজের প্রার্থীতার বিষয়ে প্রকাশ করছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন প্রত্যাশী বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত নিজের ছবি দিয়ে শুভেচ্ছা ব্যানার, ফেস্টুন টাঙ্গিয়ে দিয়েছেন প্রত্যন্ত গ্রাম গঞ্জে ও বিভিন্ন জন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়।
পাবনা-৩ এলাকায় প্রচার প্রচারণায় ও তৃণমুল নেতা কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে যাদের নাম আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশার তালিকায় শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. মকবুল হোসেন, কেন্দ্রীয় সাবেক আ’লীগ নেতা ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ইঞ্জি: মো. আব্দুল আলিম, পাবনা জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ মাষ্টার, পাবনা জেলা আ’লীগের উপদেষ্টা আ.স.ম আব্দুর রহিম পাকন, সাবেক ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বাকি বিল্লাহ। চাটমোহর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন সাখো, বিএমএ পাবনা জেলা শাখার সভাপতি ডা. গোলজার হোসেন, ফরিদপুর উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আলি আশরাফুল কবির।
তবে এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পাবনা-৩ এলাকার তিনটি উপজেলা চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর এর তৃণমূল নেতা কর্মীদের সাথে সংযোগ রক্ষা করে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন পাবনা জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ মাষ্টার, উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক ভাঙ্গুরা পৌর মেয়র সাবেক ছাত্রনেতা বাকি বিল্লাহ ও ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল আলিম। তারা ইতিমধ্যে আ’লীগ নেতা কর্মী সহ সাধারন মানুষের মধ্যে আলোচনায় চলে এসেছেন।
জানা গেছে, পাবনা-৩ আসনের বর্তমান এমপি জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি মকবুল হোসেন। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান দিয়ে রাজনীতি শুরু করলেও আশির দশকে জাতীয় পার্টির সমর্থনে দুইবার চাটমোহর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর নানা ধরনের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির কারনে সামনের নির্বাচনে খুবই নাজুক অবস্থায় আছেন । বিশেষ করে দলের অনেক ত্যাগী নেতাকে বাদ দিয়ে নিজের ছেলেকে পৌর মেয়র বানিয়ে এবং অন্য পৌরসভায় নিজ দলের মেয়র প্রার্থীদের সুকৌশলে হারিয়ে দিয়ে কেন্দ্রের কাছে প্রশ্ন বিদ্ধ হয়ে আছেন কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বর্তমান এমপি মকবুল হোসেন। নানা কারনে এবার তাই মনোনয়ন ঝুকিতে আছেন এক সময়ের জনপ্রিয় এই নেতা । সেক্ষেত্রে মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন ভাঙ্গুরা উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক ভাঙ্গুরা পৌর মেয়র সাবেক ছাত্রনেতা বাকী বিল্লাহ, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, ফরিদপুর পৌরসভার পরপর দুইবার নির্বাচিত মেয়র খ,ম, কামরুজ্জামান মাজেদ, ফরিদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আলী আশরাফুল কবির, চাটমোহর উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন সাখো প্রমুখ।
এ ব্যাপারে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ বাবু বলেন, নেতাকর্মীদের কাছে এবং জনগনের দৌড়গোড়ায় যেসহ নেতাকর্মীরা আছেন তাদেরকেই মনোনয়নের জন্য তালিকা পাঠানো হবে। তিনি বলেন, সৎ, যোগ্য ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
এদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর বয়েন উদ্দীন মিয়া। এছাড়াও বিএনপির মনোনয়ন পেতে মাঠে রয়েছেন, সাবেক সাংসদ কেএম আনোয়ারুল ইসলাম, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মাসুদ খোন্দকার, বিশিষ্ঠ সাংবাদিক পাবনা জেলা বিএনপির দফতর সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান ফখরুল আযম, বিএনপি নেতা হাসাদুল ইসলাম রাজা।
তবে বিএনপির কোন নেতা মাঠে না থাকলেও ব্যানার, পোস্টার দেখা মিলছে। নেতাকর্মীদের অভিযোগ, পাবনা-৩ এলাকার তিনটি উপজেলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচী তেমন ভাবে পালিত না হওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তেই চুড়ান্ত হবে মনোনয়ন। তবে যাকেই দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হবে তাকেই জয়যুক্ত করতে হবে।