পাবনা-৫ (সদর) দেখা মিলছে না ধানের শীষ : গণসংযোগে ব্যস্ত নৌকা প্রার্থী
নিজস্ব প্রতিবেক, পাবনা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও পোষ্টার ও গণসংযোগে দেখা মিলছে না পাবনা-৫ (সদর) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা মাওলানা ইকবাল হুসাইনকে। যদিও দলীয় নেতাকর্মীদের নামে হামলা-মামলার ভয়ে অনেকে নেতাকর্মীই মাঠে নেই বলে জানা গেছে। এদিকে পাবনা সদর আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন না পেয়ে জামায়াত নেতা ধানের শীর্ষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করায় বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকেই জেলার অন্যান্য আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর উঠান বৈঠক ও গণসংযোগে দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির ও জামায়াত নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্ঠি হয়েছে। তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, জেলার বিভিন্ন আসনে নির্বাচন কমিটি কাজ করছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান এমপি গোলাম ফারুক প্রিন্সের পোস্টার শহরের অলি-গলি থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাটে শোভা পাচ্ছে। আর প্রতিদিন নির্বাচনী এলাকার উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট পার্থনায় ব্যস্ত রয়েছেন প্রার্থীসহ তার দলীয় নেতাকর্মীরা। সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি কর্মকান্ডের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ণমূলক কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরছেন। যেন দম ফেলার সময় নেই।
পাবনা জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, সদর আসনসহ অন্যান্য আসনেও পোস্টার লাগানো থেকে শুরু করে গণসংযোগে বাধার কারণে অনেকটাই কৌশলে কাজ করতে হচ্ছে। তবে সদর আসনে পৌর বিএনপির নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়েছে তারা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করছেন। জামায়াত-বিএনপির মধ্যে কোন ক্ষোভ নাই বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে পাবনা জেলা জামায়াতের সুরা সদস্য মাওলানা আমিরুল ইসলাম বলেন, পোস্টার লাগালে ছিরে ফেলা হচ্ছে। তবে বিএনপির অনেক নেতাই সদর আসনে কাজ না করলেও শেষ মুহুর্তে তারা ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করবেন বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, পাবনায় নৌকার জোয়ার এসেছে। নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সব মানুষের মধ্যে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটের মাধ্যমে নৌকা প্রতীক বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। তবে ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে লোক না থাকায় তারা উল্টোপাল্টা কথা বলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
পাবনা-৫ আসন থেকে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জামায়াত নেতা মাওলানা আবদুস সুবহান আওয়ামীলীগ প্রার্থী রফিকুল ইসলাম বকুলকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল আওয়ামীলীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) একে খন্দকারকে পরাজিত করে বিএনপি প্রার্থী বকুল নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে জামায়াত নেতা মাওলানা আবদুস সুবহান আওয়ামীলীগ প্রার্থী ওয়াজি উদ্দিন খানকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সেই সময়ে আওয়ামীলীগের উদীয়মান নেতা হিসেবে পরিচিত বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে চার দলীয় জোটের প্রার্থী জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুস সুবহানকে পরাজিত করেন। ২০১৪ সাল দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোলাম ফারুক প্রিন্স বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
পাবনা সদর আসনে মোট প্রার্থী রয়েছেন ৫ জন। তারা হলেন, গোলাম ফারুক প্রিন্স (নৌকা), মাওলানা ইকবাল হুসাইন (ধানের শীষ), অধ্যাপক মো: আরিফ বিল্লাহ (হাতপাখা), আব্দুল কাদের (লাঙ্গল), আবু দাউদ (আম)।
বর্তমানে পাবনা পৌরসভা ও সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসনে মোট ভোট রয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার ১০ জন এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৪ হাজার ৪৫০ এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ১০ হাজার ৫৬০ জন।