বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবলে বুরুন্ডির পেছনে ৫৩ লাখ গচ্চা

স্পোর্টস: বছরের শুরুতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবলের ষষ্ঠ আসর। সেই আসরে রানার্সআপ হয়েছিল পূর্ব আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডি। রানার্সআপের অর্থ পুরস্কার ২০ হাজার ডলার কয়েক দিন আগে পাঠানো হয়েছে। বুরুন্ডি অবশ্য তাদের অর্থ পুরস্কার দাবি করে আসছিল অনেক দিন ধরেই। কিন্তু বাফুফে নানা কারণে সেটি পাঠাতে পারছিল না। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ জানিয়েছেন, মূলত করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সাধারণ ছুটি ছিল দেশ জুড়ে। যে কারণে টাকা পাঠাতে বিলম্ব হয়েছিল।

তাছাড়া টাকা পাঠাতে কিছু নিয়মকানুনও অনুসরণ করতে হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়। গত জানুয়ারিতে এই টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ানোর আগে অবশ্য বেশ ঝক্কি পোহাতে হয়েছিল বাফুফেকে। একই সময়ে বিশ্বকাপ বাছাই এবং এশিয়ান কাপ ফুটবলের বাছাই চলছিল বলে কোনো দেশই জাতীয় দল পাঠাতে আগ্রহী ছিল না। আফ্রিকান দেশ সেশেলস, বুরুন্ডি, মরিশাসকে উড়িয়ে এনেছিল বাফুফে। কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরুর আগে হুট করেই হাজির হয় অনাহুত বিপত্তি।

১৫ জানুয়ারি টুর্নামেন্ট মাঠে গড়াবে, তার মাত্র দুই দিন আগে বুরুন্ডি জানিয়ে দেয়, তারা আসতে পারবে না! মাথায় বাজ পড়ে বাফুফের কর্মকর্তাদের। বুরুন্ডি থেকে নাইরোবী-ভারত হয়ে ঢাকায় আসার কথা দলটির। কিন্তু ভারতীয় ভিসা না থাকায় তাদের গোটা দলই নাকি বিমানে চড়তে পারেনি। ওদিকে বিকল্প কোনো ফ্লাইটও ছিল না। বুরুন্ডির ফুটবল কর্মকর্তারা জানিয়ে দেন, তারা ঢাকায় আসবেন না। ঘরে ফিরে যাচ্ছেন। বাফুফের কর্তাদের তখন হন্যে হয়ে উপায় খুঁজছিলেন অতিথিদের আনতে।

পরে তড়িঘড়ি করে কাতার এয়ার ওয়েজের একটি ফ্লাইটে দোহা হয়ে ঢাকায় আনা হয় বুরুন্ডিকে। টুর্নামেন্ট শেষের ৫ মাস পর বুরুন্ডিকে ঢাকায় আনতে গিয়ে কীভাবে অর্ধকোটি টাকা গচ্চা দিতে হয়েছিল বাফুফেকে, সেই গল্প শোনালেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক। বুরুন্ডির জন্য বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে দেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে। সোহাগ বলেন, কাতার এয়ারওয়েজের বিমানে কিনতে হবে বিজনেস ক্লাসের টিকিট, সঙ্গে এয়ারওয়েজের শর্ত ছিল ফেরার টিকিটও নিশ্চিত করতে হবে।

উপায় না দেখে ৫৩ লাখ টাকা বাড়তি গুনতে হয়েছিল বাফুফেকে। তিনি বলেন, ‘তখন ওই পরিস্থিতিতে উপায় ছিল না। দুই দিন পর খেলা।’ ছয় দলের টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফিলিস্তিন। চ্যাম্পিয়ন দলকে এখনো অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়নি। সোহাগ বললেন, ‘ওরা চায়নি।

আস্তে ধীরে দেওয়া হবে। আমাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনের ভালো সম্পর্ক। আমরা পাঠিয়ে দেবো।’ শুধু বঙ্গবন্ধু কাপই নয়, চট্টগ্রাম আবাহনী আয়োজিত শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গুন ক্লাবও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পুরস্কার ৫০ হাজার ডলার এখনো পায়নি। জানা গেছে তাদেরকেও পুরস্কারের টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!