বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিলো যুক্তরাষ্ট্র

বিদেশ : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সঙ্গে তার দেশের সম্পর্কের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন।  মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাস নিয়ে ডব্লিউএইচও চীনকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারেনি বলে তিনি অভিযোগও করেছেন।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে ট্রাম্প এ অভিযোগ করেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন পুরোপুরি চীনের নিয়ন্ত্রণে,” বলেছেন তিনি।

ওয়াশিংটন এখন থেকে ডব্লিউএইচও’র বদলে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও দাতব্য সংস্থাকে অর্থ দেবে, জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় এতদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বেশি অর্থ দিতো; কেবল ২০১৯ সালেই তাদেরসাহায্যের পরিমাণ ছিল ৪০ কোটি ডলারের বেশি।

ট্রাম্প ঘোষণা দিলেও ডব্লিউএইচও’র সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কচ্ছেদ কবে থেকে কার্যকর হচ্ছে, তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। যুক্তরাষ্ট্র এক বছরের নোটিস দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারবে বলে ১৯৪৮ সালে মার্কিন কংগ্রেসের এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছিল।
ট্রাম্পের ঘোষণা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হতে ইচ্ছুক ট্রাম্প করোনাভাইরাস মোকাবেলায় তার প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র চাপের মুখে আছেন।

কোভিড-১৯ এরইমধ্যে দেশটির এক লাখ দুই হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে; আক্রান্তের সংখ্যাও ১৭ লাখ পেরিয়ে ছুটছে ১৮ লাখের দিকে। সমালোচকরা বলছেন, প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সময়মতো পদক্ষেপ নিতে ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণেই আক্রান্ত-মৃত্যুর এ সংখ্যাধিক্য। নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখন চীনকে দোষারোপ করছেন বলেও মত তাদের।

“আজ থেকে আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে যাচ্ছি; তাদের জন্য থাকা তহবিল জনস্বাস্থ্য বিষয়ক অন্যান্য দাতা সংস্থাকে বরাদ্দে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে,” শুক্রবার রোজ গার্ডেনে ট্রাম্প এমনটাই বলেছেন।

চীন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে চাপ দিয়ে নতুন করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করেছে বলে আগের অভিযোগ পুনর্ব্যক্তও করেন তিনি। “বিশ্ব এখন চীন সরকারের কুকর্মের ফল ভোগ করছে,” বলেন ট্রাম্প।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও তার প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কয়েক মাস ধরেই নতুন করোনাভাইরাসের উৎপত্তি ও এর বিস্তারে বেইজিংকে দায়ী করে এলেও বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজ্ঞানীই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসটি মনুষ্যসৃষ্ট হতে পারে না বলে অভিমত দিয়েছেন। চীন শুরু থেকেই তাদের নাম জড়িয়ে চলমান সব ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’কে প্রত্যাখ্যান করেছে।

নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে ট্রাম্প প্রশাসন মহামারী নিয়ে রাজনীতি করছে বলে পাল্টা অভিযোগও করেছে তারা।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!