ভাঙ্গুড়ায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে পেটানোর ঘটনায় বিক্ষোভ
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি: পাবনার ভাঙ্গুড়ায় দুই শিক্ষক কর্র্তৃক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে পেটানোর ঘটনায় মঙ্গলবার এলাকাবাসী বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ছাত্র-ছাত্রীরাও ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভে অংশ নেয়। খবর পেয়ে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। ঘটনাটি উপজেলার অষ্টমণিষা ইউনিয়নের রূপসী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটে।
জানা গেছে,এলাকাবাসী সাত দফা দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এগুলোর মধ্যে তারা ছাত্র নির্যাতনের সঠিক বিচার চান। তারা আরো দাবি করেন পরবর্তীতেও কোন ছাত্রকে শারীরিক নির্যাতন করা যাবে না। সরকারের বিধি মোতাবেক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি তৈরির ক্ষেত্রে বহিরাগত ছাত্র ও তাদের অভিভাবকের ভোট বা মতামত গ্রহন করা যাবে না। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনে শিক্ষিত ও সুশীল সমাজের সদস্যদের প্রাধান্য দিতে হবে। এছাড়া নির্যাতিত ছাত্র ইকলাসকে প্রহারের বিচার না হ্ওয়া র্পযন্ত কোনো অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠাবে না।
প্রধান শিক্ষক সাইদুল ইসলাম বলেন ইকলাস এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। সোমবার তার ব্যবহারিক পরীক্ষা ছিল কিন্তু সে বহিরাগত ছাত্রদের বিদ্যালয়ে এনে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে। এজন্য একজন শিক্ষক তাকে প্রহার করেন। এর প্রতিবাদে ইকলাস তার সঙ্গীদের নিয়ে ঐ শিক্ষকের উপর চড়াও হয় এবং তাকে মারপিট করে।
ভাঙ্গুড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে চিকিৎসারত আহত ইকলাস বলেন,আমি পরীক্ষার খাতা স্বাক্ষর করাতে গিয়েছিলাম কিন্তু খাতা স্বাক্ষরের জন্য দাবিকৃত টাকা দিতে আস্বীকার করায় আমাকে রাসেদুল ও সাঈদ স্যার মিথ্যা অপবাদে নির্যাতন করে গুরুতর আহত করেন। আমার কোন অপরাধ ছিল না।
ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুদ রানা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ছাত্র-শিক্ষক দু’জনই বেপরোয়া ভাবে গন্ডগোল করেছেন। এটাকে ইস্যু করে একটি পক্ষ আইন শৃংখলা ভঙ্গের চেষ্টা করলে পুলিশ তা প্রতিহত করে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল আলম বলেন,আমি বিষয়টি তদন্তের জন্য মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম কিন্তু গ্রামের কতিপয় ব্যক্তির হুর-হাঙ্গামার কারণে ফিরে এসেছি। মঙ্গলবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।।
উল্লেখ্য,গত কিছুদিন পূর্বে ওই স্কুলের ছাত্র ও এসএসসি পরীক্ষার্থী ইকলাস রহমান (১৬) অন্য একটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের তাদের স্কুলে আসতে নিষেধ করে। এ ঘটনায় পরে আর কিছুই হয়নি। তবে সোমবার সকালে ইকলাস ব্যবহারিক পরীক্ষার খাতা স্বাক্ষর করাতে স্কলে যায়। এসময় সহকারি প্রধান শিক্ষক রাসেদুল ইসলাম ও সহকারি শিক্ষক আবু সাঈদ শিক্ষার্থী ইকলাসকে ডেকে অফিস রুমে নিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিসহ বেত দিয়ে পেটাতে শুরু করে। প্রতিবাদ করায় তার ওপর আরও বেশি নির্যাতন চালায়। এতে ইকলাসের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়। খবর পেয়ে ওই ছাত্রের ফুফু হাসিনা খাতুন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।