ভূমিহীন নারীর সরকারি ঘর দিতে মেম্বরের ১০ হাজার টাকা করে আদায়
নাটোর প্রতিনিধি : অন্যের বাসাবাড়িতে কাজ করে দু’মুঠো ভাত আর সামান্য দু-একটি করে টাকা জুগিয়ে সংসার চলে সিংড়া উপজেলার গুনাইখাড়া ভাটোপাড়া গ্রামের ভূমিহীন ফুল বিবির। স্বামী গফ্ফার আলী মারা গেছেন প্রায় ২০বছর আগে। সরকারি একটি ঘরের জন্য ১১মাস আগে ১০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন হাতিয়ান্দহ ইউপির ১নং ওয়ার্ড সদস্য মো. মেহের আলীর হাতে। এরপর থেকেই ইউপি সদস্যের দেখা মিললেই বিভিন্ন রকম তালবাহানা।
এবিষয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভূমিহীন ফুল বিবি। কিন্তু অভিযোগ করাটাই যেন ফুল বিবির গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোপনে টাকা দিয়ে মীমাংসা ও অভিযোগ তুলে নিতে প্রতিনিয়তই তাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বলে মেম্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে (৭ফেব্রুয়ারি) রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত একটানা ৪ঘন্টা ওই ভূমিহীন বৃদ্ধা মহিলাকে ভূমি অফিসে ডেকে বসিয়ে রাখেন সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মো. রকিবুল হাসান। পরে বিষয়টি নিয়ে কোন সুরহা না পেয়ে তখন নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সিংড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জি ডি) করেন ভুক্তভোগী ফুল বিবি।
ফুল বিবি এই প্রতিবেদককে বলেন, বাবা সরকারি ঘর পেতে মেম্বরকে ১০হাজার টাকা দিইছি। এখন হামার কষ্টের টাকাডা স্যারের সামনে ফেরত দেক। কিন্তু মে¤^ার গোপনে টাকাডা ফেরত দিতে গেছে। না নেয়ায় তাকে এখন রাস্তা-ঘাটে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. মেহের আলী বলেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। আর কাউকে হুমকিও দেননি বলে জানান তিনি।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জি ডি দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম.এম সামিরুল ইসলাম বলেন, তার দপ্তরে ইউপি সদস্য মেহের আলীর বিরুদ্ধে একজন ভূমিহীন মহিলা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাছাড়া এখন ওই মহিলাকে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে মৌখিক ভাবে বিষয়টি তিনি শুনেছেন। বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।