যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে গুলিতে নিহত ৬ বাংলাদেশীর দাফন সম্পন্ন
পিপ (পাবনা) : যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে গুলিতে নিহত একই পরিবারের ৬ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ২টায় টেক্সাসের অ্যালেনে দীর্ঘ আড়াই ঘন্টার প্রার্থণা শেষে তাদের দাফন করা হয়। জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানে নিহত আইরিন ইসলামের ভাই নিউইয়র্কে বসবাসরত আতাউর রহমানরহ স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন অংশ নেন।
নিহতদের পারিবারিক সুত্র জানায়, নিহত তৌহিদুল ইসলাম, তার স্ত্রী মিসেস আইরিন ইসলাম, মেয়ে ফারবীন তৌহিদ ও শাশুড়ি আলতাফুন নেছাকে একই স্থানে এবং দুই ছেলে তানভীর তৌহিদ ও ফারহান তৌহিদ কে অন্য স্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে শুক্রবার পাবনার দোহারপাড়া ও আরিফপুর কবরস্থানে নিহতদের স্মরণে ও তাদের আতœার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে স্বপ্নের দেশ আমেরিকাতে স্বপরিবারে বসবাস করেন সিটি ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট তৌহিদুল ইসলাম। স্ত্রী মিসেস আইরিন ইসলাম নীলা তৌহিদ, তিন সন্তান তানভীর, ফারবিন এবং ফারহানকে নিয়ে সুখের শান্তিতে বসবাস করছিলেন। তৌহিদের শাশুড়ি নীলার বৃদ্ধা মা আলতাফুন নেসাও তাদের সঙ্গে টেক্সাসে ছিলেন। গত শুক্রবার রাতে পাবনায় আলতাফুননেছার ছেলেদের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়। ১ এপ্রিল আলতাফুননেছার পাবনায় ফেরার কথা। করোনার কারণে সেই ফ্লাইট বাতিল হয়ে পরবর্তিতে ৭ এপ্রিল দেশে আসার দিন ঠিক হয়। কিন্তু গত শুক্র অথবা শনিবার রাতে তারা নৃশংসভাবে খুনের শিকার হন।
পুলিশের ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে গত শনিবার কোনো এক সময়ে বাবা তৌহিদুল ইসলাম, মা আইরিন ইসলাম, বোন ফারবিন তৌহিদ ও নানি আলতাফুন্নেসাকে গুলি করে হত্যার পর দুই ছেলে ফারদিন ও তানভীর আত্মহননের পথ বেছে নেন। মরদেহগুলো সোমবার সকালে উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের ধারণা, হত্যাকান্ডে আগেই দুই ছেলে পরিকল্পনা করেন এবং বড় ছেলে তানভীর একটি বন্দুক জোগাড় করেন।
এদিকে, টেক্সাসের অ্যালেন নগরীর পাইন ড্রাইভ এলাকার ওই বাড়ির প্রতিবেশীরা এই হত্যাকান্ড কোন মতেই মানতেই পারছেন না। নিহত পরিবারের ঘনিষ্ঠজন তানিয়া হোসেন বার্তা সংস্থা পিপ‘কে বলেন, ‘তারা আমাদের খুব প্রিয় ছিল’। এমন মৃত্যু একেবারেই অনাকাংখিত। এখনো ভাবতে কষ্ট হয় তারা মারা গেছে।’
ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যালেনের ইমাম আবদুর রহমান বশির বার্তা সংস্থা পিপ‘কে বলেছেন, ‘পরিবারটির স্মৃতি অন্তরে ধারণ করতে হবে আমাদের। আমাদের পরিবারের সদস্য, সন্তানসহ পরিচিত যে কেউই যখন সাহায্য চাইবে, তাদের পাশে দাঁড়ানোর গুরুত্ব আমাদের অনুধাবন করতে হবে।’
ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যালেন এবং ভুক্তভোগী পরিবারের নিকটজন ও বন্ধু-বান্ধবেরা নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করেন।