যুক্তরাষ্ট্রের যে আচরণে হতাশ ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ কাতার

বিদেশ: যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ নিয়ে কাতারে হাতাশা বাড়ছে। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এ ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’র হতাশার কারণ হলোÑ বাইডেন প্রশাসন ড্রোন কেনার জন্য কাতারের অনুরোধের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দেরি করছে। গত বছর কাতার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ড্রোন কেনার অনুরোধ জানায়। মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় মিডল ইস্ট আই। সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে দীর্ঘ ২০ বছরের অভিযান শেষ করে দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করে যুক্তরাষ্ট্র। এ সময় হাজার হাজার বেসামরিক আফগানকে কাবুল থেকে সরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা করেছে মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে দেশটির অন্যতম সহযোগী কাতার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চারটি এমকিউ-৯বি ড্রোন কেনার জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন করে। কাতার সরকারের এক কর্মকর্তা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেন, আমাদের দিক থেকে হতাশার বিষয় হলো, আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিতে কেন দেরি হচ্ছে সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ইঙ্গিত নেই। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য মিত্রদের আবেদন কিন্তু ঠিকই গ্রহণ করেছে। তবে কেন কাতারের ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তির বিষয় স্থবির হয়ে আছে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। যখন ওয়াশিংটন ও দোহার মধ্যে সুসম্পর্ক বিদ্যমান সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা কাতারের সঙ্গে মুসলিম ব্রাদারহুড, হামাস এবং তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তবে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ায় কাতারের সহযোগিতার বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন মার্কিন এক কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বলেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ায় কাতারের সহযোগিতা প্রমাণ করেছে যে, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার উদ্দেশে কাতার সবসময় তার মিত্রদের সমর্থন দিতে প্রস্তুত। ভিন্ন এক আবেদনে কাতার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানও কিনতে চেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সৌদি আরবের পরে কাতার যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা। সার্বিক দিক বিবেচনায় নিলে ‘ঘনিষ্ট মিত্র’ হয়েও যুক্তরাষ্ট্রের এমন উপেক্ষা কাতার মানতে পারছে না। আগামী মাসে যুক্তরাষ্ট্রে সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির। সে সফরে অস্ত্র সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২০ এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র রপ্তানির ৪৭ শতাংশ হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। যা আগের পাঁচ বছরের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে কাতারে বেড়েছে ২০৮ শতাংশ, সৌদি আরবে ১৭৫ শতাংশ এবং ইসরাইলে ৩৩৫ শতাংশ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!