যেসব স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিক ব্যবহারে

স্বাস্থ্য: যারা সাজতে পছন্দ করেন আর যারা করেন না, তাদের সবারই কমবেশি লিপস্টিক পছন্দ। তবে করোনাকালে মাস্কের নিচে ঢাকা পড়েছে এই পছন্দের লিপস্টিক। দীর্ঘ এই সময়ে অনেক লিপস্টিকের ডেট এক্সপায়ারড হয়ে গেছে। কিন্তু তার পরেও কেউ জেনেশুনে কেউ বা না জেনেই সে লিপস্টিক ব্যবহার করছেন। ডেট এক্সপায়ারড হওয়া লিপস্টিক ব্যবহারের ফলে যেসব ক্ষতি হতে পারে তা জানিয়েছেন একজন বিশেষজ্ঞ ডার্মাটোলজিস্ট।
আপনি কয়েক বছর আগের লিপস্টিক যদি ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে তা এখনই বাদ দিন। কারণ শুধু এই মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া লিপস্টিক ব্যবহারে আপনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। অন্যান্য প্রসাধনীর মতো লিপস্টিকেরও একটি মেয়াদ রয়েছে। একটা প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের লিপস্টিক ১২ থেকে ১৮ মাসের মতো ভালো থাকে।
কিন্তু এখন কথা হলো, কিভাবে বুঝবেন আপনার লিপস্টিকের ডেট আছে নাকি এক্সপায়ারড।
১. প্রথমত এক্সপায়ার ডেট চেক করে দেখুন।
২. লিপস্টিকের গন্ধ স্বাভাবিক আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখুন।
৩. লিপস্টিকের আর্দ্রতা কেমন আছে তা পরীক্ষা করে দেখুন।
৪. লিপস্টিক দেওয়ার সময় খেয়াল রাখুন ঠোঁটে লেগে থাকে নাকি সরে যায় বারবার।
এ সব কিছু খেয়াল না করে আপনি যদি ডেট এক্সপায়ার হওয়া লিপস্টিক ব্যবহার করেন, তাহলে কী হতে পারে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
বিখ্যাত ডার্মাটোলজিস্ট ডা. অজয় রানার মতে, এক্সপায়ারড লিপস্টিক অনেক অসুস্থতার কারণ হতে পারে। তিনি বলেন, যখন একটি লিপস্টিকের ডেট অতিক্রম হয়ে যায় এটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এক্সপায়ারড লিপস্টিকে এন্টারোককাস ফ্যাকালিস থাকে, যা একটি চরম মাত্রার ব্যাকটেরিয়া। এর ফলে মেনিনজাইটিসের মতো রোগ হতে পারে।
মুখের চারপাশে চুলকানি :
মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিক ব্যবহার করলে ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে চুলকানি হতে পারে। লিপস্টিকের মূল উপাদান হলো ল্যানোলিন, ওয়াক্স এবং ডাই। এই ল্যানোনিনের কারণে অ্যালার্জি, ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া, ফাটাসহ মিউকাস মেমব্রেন হতে পারে। এ থেকে পরবর্তী সময়ে ব্যথাও হতে পারে।
কিডনি, মস্তিষ্ক ও অ্যানিমিয়ার সমস্যা :
মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিকে উপস্থিত ল্যানোলিনের মাধ্যমে ধুলো, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং কিছু ভারী ধাতব ঠোঁট শোষণ করে। মানুষ যখন পানি পান করে, তখন এই ক্ষতিকর পদার্থগুলো সরাসরি শরীরে প্রবেশ করে।
অজয় রানা বলেন, লিপস্টিকে প্রচুর পরিমাণে ভারী ধাতু, যেমন সিসা এবং ক্যাডমিয়াম থাকে। মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিক ব্যবহার দীর্ঘস্থায়ী সিসার বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে, যার ফলে রক্তশূন্যতা, পেটে ব্যথা, তীব্র রেনাল ফেইলিওর এবং ব্রেন নিউরোপ্যাথির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ব্রেস্ট টিউমার :
লিপস্টিকের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এ থেকে ব্রেস্ট টিউমার পর্যন্ত হতে পারে। লিপস্টিকে অবস্থিত রঞ্জক পদার্থ অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে এসে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। লিপস্টিক দেওয়ার পর যদি চুলকানি হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
এ জন্য এখনই বাসার ড্রয়ার চেক করে দেখুন কোথায় কোন লিপস্টিকের ডেট এক্সপায়ার হয়েছে। সেগুলো দ্রুত ফেলে দিন।
সূত্র : হেলথ শটস।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!