যে কারণে শেষ পর্যন্ত সেনা নামাতে পারেননি ট্রাম্প
বিদেশ : জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকা-ের জেরে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ যখন সর্বোচ্চ সহিংস রূপ নিয়েছিল, সে সময় দেশজুড়ে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্দেশনা পেলে সঙ্গে সঙ্গেই নেমে পড়ার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত থাকারও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত আর রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দমনে অংশ নিতে হয়নি সেনাদের।
এটি সম্ভব হয়েছে মূলত ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের কারণেই। এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভের জেরে ওয়াশিংটন ডিসিতে ১০ হাজার সেনা নামাতে চেয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে এ পরিকল্পনায় বাঁধ সাধেন পেন্টাগনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। ওই সময় এক জরুরি বৈঠকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার, জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ জেনারেল মার্ক মাইলি ও অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার ট্রাম্পকে সেনা মোতায়েন থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন।
আলোচনার একপর্যায়ে বৈঠকটি অত্যন্ত বাদানুবাদপূর্ণ হয়ে উঠেছিল বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। উপদেষ্টাদের পরামর্শে সেনা মোতায়েনের বদলে ন্যাশনাল গার্ড নামিয়েই সন্তুষ্ট থাকেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেসময় পেন্টাগনের কর্মকর্তারা জরুরি ভিত্তিতে ওয়াশিংটনে বাড়তি গার্ড সদস্য পাঠাতেও অনুরোধ করেন। পাশাপাশি ফেডারেল আইনও জারি করা হয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পরামর্শে ওয়াশিংটন ডিসিতে ৮২তম এয়ারবোর্ন ডিভিশনসহ আরও কয়েকটি ইউনিটকে প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন ট্রাম্প।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘তখন মোতায়েন না করলেও সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত রাখাই প্রেসিডেন্টের জন্য যথেষ্ট ছিল।’ রোববার উইলিয়াম বার জানিয়েছেন, ওয়াশিংটনের রাস্তায় কোনও সেনা নামানো হয়নি। তবে কাছাকাছি কিছু মিলিটারি পুলিশ ছিল। প্রয়োজনবোধে মোতায়েনের জন্য তাদের প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। গত ২৫ মে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গের। তাকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। তা থেকেই বিক্ষোভের সূত্রপাত।
প্রথমদিকে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকলেও ধীরে ধীরে তা সহিংসতায় রূপ নেয়। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের বাইরে যখন অসংখ্য মানুষ বিক্ষোভ করছিলেন সে সময় নিরাপত্তার কথা ভেবে ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল ট্রাম্পকে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল ভবনটির সব আলো। পরে বিক্ষোভের কারণে সৃষ্ট অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের হুঁশিয়ারি দেন এ রিপাবলিকান নেতা।
এক ভাষণে ট্রাম্প বলেন, যদি বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও শহরগুলোতে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না হয় এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না যায় তবে এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে তিনি সেনা মোতায়েন করবেন।