যে কারনে অজুতে কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত করতে হয়

মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ: অজুর শুরুতে উভয় হাত কবজি পর্যন্ত ধৌত করতে হয়। কিন্তু পরে আবার উভয় হাত কনুইসহ ধৌত করতে হয়। এর কারণ হলো
কলিজা ও হৃদয়ের রক্তকে শক্তিশালী ও পরিচ্ছন্ন করার জন্য হাত ধৌত করা উপকারী। বিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে বিষয়টি গোপন নয়। উত্তমভাবে তখনই ধৌত করা হয়, যখন হাতের সেসব রগ ধৌত করার আওতায় এসে যায়, যেগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্তর পর্যন্ত পৌঁছে। যেসব রগ অন্তর পর্যন্ত পৌঁছে সেগুলোর কিছু হাতের আঙুল থেকে, কিছু হাতের তালু থেকে, কিছু হাতের বাহু থেকে এবং কিছু কনুই থেকে শুরু হয়। এ জন্যই কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত করতে বলা হয়েছে, যেন সব রগ ধোয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।
এ আলোচনার বিস্তারিত বিবরণ হলো, হাত ও মুখ ধৌত করার দ্বারা অন্তর ও কলিজা শক্তি লাভ করে এবং পানির প্রভাব রগের মাধ্যমে ভেতরে প্রবেশ করে। তাই কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘…অজুতে কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত করো…। (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ১১)
সার্জারি বিশেষজ্ঞরা যখন কোনো রোগের দ্রুত আরোগ্যের লক্ষ্যে অথবা রক্ত শোধন বা কলিজা ও হৃদেরাগ ইত্যাদির চিকিৎসার জন্য ‘নাহরুল বদন’ নামক শিরা থেকে রক্ত নেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেন, তখন সিরিঞ্জের সাহায্যে কনুই বরাবর (ওপরাংশের) রগ থেকে রক্ত বের করে থাকেন। কেননা এ স্থানেই এ রগ প্রকাশ হয়। তা ছাড়া অন্তরের এ প্রভাব সমগ্র দেহকে বেষ্টন করে আছে। তাই কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন কনুইয়ের শিরার মাধ্যমে পানির প্রভাব সমগ্র দেহে ছড়িয়ে পড়ে।
অজুতে যখন শরীরের মূল অঙ্গসমূহ ধৌত করার বিধান রাখা হয়েছে, তখন হাতকে কনুই পর্যন্ত ধৌত করার বিধান এ জন্যই দেওয়া হয়েছে যে, এর চেয়ে কম ধৌত করা হলে তার প্রভাব মানুষের অন্তরে অনুভূত হয় না।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!