রমজান ঘিরে ঊর্ধ্বমুখী চিনির দাম
এক্সক্লুসিভ: ক্রমাগত বেড়েই চলেছে চিনির দাম। গত এক বছরে দেশে চিনির দাম প্রতি মণে ৫০০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে চাহিদা বৃদ্ধি ও আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে চিনির দাম বাড়ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণে চিনির দাম বেড়েছে ১২০ টাকা। রোজার মধ্যে চাহিদা বেড়ে গেলে দাম আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দুদিন আগেও মণপ্রতি যে চিনি বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২৭০ টাকায়। ওই একই মানের চিনিই এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩৯০ টাকায়। ডিলারদের নিষ্ক্রিয়তা, টিসিবির মাধ্যমে চিনি বিক্রির পরিমাণ কমে যাওয়া এবং ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকারি চিনি বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি মিলগুলো চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাছাড়া আসন্ন রমজান সামনে রেখে বেসরকারি মিলগুলোতে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে চিনির দাম। রমজান উপলক্ষে অসাধু ব্যবসায়ীরা চিনি মজুদ করে রাখছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিএসএফআইসি এবং চিনির পাইকারি বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকার চলতি মৌসুমে ৬টি চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। আর ১ মার্চ পর্যন্ত বাকি ৯টি চিনিকলে মোট উৎপাদন হয়েছে ৪১ হাজার ৬৪৮ দশমিক ৬০ টন চিনি। তাছাড়া আগের মজুদ ছিল ৫৬ হাজার ৩০ দশমিক ৯১ টন। ১ মার্চ পর্যন্ত ফ্রি সেল, ডিলার ও সরকারি সংস্থার কাছে চিনি বিক্রি করা হয়েছে মোট ৪৮ হাজার ৮৮৩ টন। সব মিলিয়ে বিএসএফআইসি’র কাছে বর্তমানে চিনির মজুদ আছে মাত্র ৪৮ হাজার ৭৯৬ দশমিক ৪৯ টন। তার মধ্যে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও মিলস রেশনের জন্য সংরক্ষিত আছে ১০ হাজার ৭৯৮ টন চিনি। সব মিলিয়ে চিনি শিল্প করপোরেশনের বিক্রয়যোগ্য চিনির মজুদ নেমে দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৯৯৮ টনে, যা সার্বিকভাবে দেশে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে খুবই অপ্রতুল।
সূত্র জানায়, দেশে চিনির চাহিদা গড়ে ১৫-১৭ লাখ টন। তার মধ্যে সরকারি মিল ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় আমদানীকৃত চিনিসহ দেড়-আড়াই লাখ টন চিনি সরবরাহ করে বিএসএফআইসি। কিন্তু ৬টি সরকারি মিল বন্ধ থাকার পাশাপাশি আমদানি না হওয়ায় বেসরকারি মিল মালিকদের নিয়ন্ত্রণে দেশে চিনির চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশেরও বেশি। তাছাড়া বিএসএফআইসির নিজস্ব প্রায় ৪ হাজার ডিলারের কাছে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশের পাইকারি ও খোলাবাজারে দাম বাড়ছে।
সূত্র আরো জানায়, চলতি অর্থবছরে গত জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে (জুলাই থেকে জানুয়ারি) দেশে বেসরকারি খাতে ৬০ হাজার ৩৩১ টন চিনি আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ হাজার ৬৩৫ টন বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে ২২০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় ৫৭ হাজার ৬৯৫ টন চিনি আমদানি হয়েছিল। অথচ চলতি অর্থ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে ৬০ হাজার ৩৩১ টন চিনি আমদানিতে ২২৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। ওই হিসেবে গত এক বছরে দেশে চিনির দাম মণপ্রতি বেড়েছে প্রায় ৫০০ টাকা। সরকারি চিনির দাম কেজিপ্রতি ৬০ টাকা হলেও বর্তমানে বেসরকারি চিনির কেজিপ্রতি পাইকারি দাম ৬৪ টাকা। মূলত সরকারি চিনির দাম কম থাকলেও বেসরকারি চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিএসএফআইসির বিক্রয় বিভাগ ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে অন্যায্যভাবে চিনি বিক্রি করে সুবিধা নিচ্ছে বলে ডিলার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ চিনি ডিলার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম-সাধারণ আনোয়ার হোসেন জানান, দেশে কয়েক হাজার ডিলার থাকলেও তারা চাহিদামতো চিনি পাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে ডিলাররা লোকসানে থাকলেও বর্তমানে দেশে চিনি সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারি চিনি মিলগুলোর উৎপাদন কমে যাওয়া, চিনিকল বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজব ছাড়াও ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের কাছে চিনি বিক্রির কারণে দেশে চিনির দাম নিয়ে নতুন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
রমজান ঘিরে ঊর্ধ্বমুখী চিনির দাম
এক্সক্লুসিভ: ক্রমাগত বেড়েই চলেছে চিনির দাম। গত এক বছরে দেশে চিনির দাম প্রতি মণে ৫০০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে চাহিদা বৃদ্ধি ও আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে চিনির দাম বাড়ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণে চিনির দাম বেড়েছে ১২০ টাকা। রোজার মধ্যে চাহিদা বেড়ে গেলে দাম আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দুদিন আগেও মণপ্রতি যে চিনি বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২৭০ টাকায়। ওই একই মানের চিনিই এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩৯০ টাকায়। ডিলারদের নিষ্ক্রিয়তা, টিসিবির মাধ্যমে চিনি বিক্রির পরিমাণ কমে যাওয়া এবং ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকারি চিনি বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি মিলগুলো চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাছাড়া আসন্ন রমজান সামনে রেখে বেসরকারি মিলগুলোতে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে চিনির দাম। রমজান উপলক্ষে অসাধু ব্যবসায়ীরা চিনি মজুদ করে রাখছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিএসএফআইসি এবং চিনির পাইকারি বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকার চলতি মৌসুমে ৬টি চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। আর ১ মার্চ পর্যন্ত বাকি ৯টি চিনিকলে মোট উৎপাদন হয়েছে ৪১ হাজার ৬৪৮ দশমিক ৬০ টন চিনি। তাছাড়া আগের মজুদ ছিল ৫৬ হাজার ৩০ দশমিক ৯১ টন। ১ মার্চ পর্যন্ত ফ্রি সেল, ডিলার ও সরকারি সংস্থার কাছে চিনি বিক্রি করা হয়েছে মোট ৪৮ হাজার ৮৮৩ টন। সব মিলিয়ে বিএসএফআইসি’র কাছে বর্তমানে চিনির মজুদ আছে মাত্র ৪৮ হাজার ৭৯৬ দশমিক ৪৯ টন। তার মধ্যে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও মিলস রেশনের জন্য সংরক্ষিত আছে ১০ হাজার ৭৯৮ টন চিনি। সব মিলিয়ে চিনি শিল্প করপোরেশনের বিক্রয়যোগ্য চিনির মজুদ নেমে দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৯৯৮ টনে, যা সার্বিকভাবে দেশে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে খুবই অপ্রতুল।
সূত্র জানায়, দেশে চিনির চাহিদা গড়ে ১৫-১৭ লাখ টন। তার মধ্যে সরকারি মিল ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় আমদানীকৃত চিনিসহ দেড়-আড়াই লাখ টন চিনি সরবরাহ করে বিএসএফআইসি। কিন্তু ৬টি সরকারি মিল বন্ধ থাকার পাশাপাশি আমদানি না হওয়ায় বেসরকারি মিল মালিকদের নিয়ন্ত্রণে দেশে চিনির চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশেরও বেশি। তাছাড়া বিএসএফআইসির নিজস্ব প্রায় ৪ হাজার ডিলারের কাছে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশের পাইকারি ও খোলাবাজারে দাম বাড়ছে।
সূত্র আরো জানায়, চলতি অর্থবছরে গত জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে (জুলাই থেকে জানুয়ারি) দেশে বেসরকারি খাতে ৬০ হাজার ৩৩১ টন চিনি আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ হাজার ৬৩৫ টন বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে ২২০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় ৫৭ হাজার ৬৯৫ টন চিনি আমদানি হয়েছিল। অথচ চলতি অর্থ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে ৬০ হাজার ৩৩১ টন চিনি আমদানিতে ২২৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। ওই হিসেবে গত এক বছরে দেশে চিনির দাম মণপ্রতি বেড়েছে প্রায় ৫০০ টাকা। সরকারি চিনির দাম কেজিপ্রতি ৬০ টাকা হলেও বর্তমানে বেসরকারি চিনির কেজিপ্রতি পাইকারি দাম ৬৪ টাকা। মূলত সরকারি চিনির দাম কম থাকলেও বেসরকারি চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিএসএফআইসির বিক্রয় বিভাগ ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে অন্যায্যভাবে চিনি বিক্রি করে সুবিধা নিচ্ছে বলে ডিলার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ চিনি ডিলার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম-সাধারণ আনোয়ার হোসেন জানান, দেশে কয়েক হাজার ডিলার থাকলেও তারা চাহিদামতো চিনি পাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে ডিলাররা লোকসানে থাকলেও বর্তমানে দেশে চিনি সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারি চিনি মিলগুলোর উৎপাদন কমে যাওয়া, চিনিকল বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজব ছাড়াও ডিলার-বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের কাছে চিনি বিক্রির কারণে দেশে চিনির দাম নিয়ে নতুন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।