রূপপুর প্রকল্পের অনুরুপ আরেকটি হবে- নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী 

পিপ (পাবনা) : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিপি) নির্মাণ কাজ শেষে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এটির অনুরুপ আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

আজ (শনিবার) দুপুরে ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শনকালে প্রকল্পে কর্মরত দেশী-বিদেশী কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

নৌ-প্রতিমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন পর আমরা উন্নয়নের সুযোগ পেয়েছি। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কাংখিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক ছাতার নিচে কাজ করছি; আশা করছি সফল হব।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকারী রাশিয়ান কোম্পানি এ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট (এএসই) ভাইস প্রেসিডেন্ট সোর্গেই লাস্টোস্কিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাস্মদ আকবর হুসেইন ও প্রকল্পের উপ-পরিচালক হাসিনুর রহমান।

ভাইস প্রসিডেন্ট সোর্গেই লাস্টোস্কিন প্রকল্পের বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন। প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে রাশিয়া থেকে আসা প্রকল্পের ভারি যন্ত্রপাতি পরিবহনে সহযোগিতার করার জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা করেন। আগামীতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণায়ের আরো সহযোগিতাও কামনা করেন এই রাশিয়ান কর্মকর্তা।

এর আগে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, রূপপুর প্রকল্পে মালামাল আনা নেওয়ার জন্য মংলা থেকে রূপপুর পর্যন্ত ৯৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নৌরুটের কাজ চলমান রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে জন্য ডিপিপি অনুমোদনের কাজ চলছে। উত্তরবঙ্গের মানুষের দাবীর নগরবাড়ি থেকে আবারো ফেরি সার্ভিস চালু করা হবে। পাবনাতে নব নির্মিত মেরিন একাডেমিতে ইতোমধ্যেই কমান্ড্যান্ট নিয়োগ করা হয়েছে। কিছু বিষয়ে চলতি শিক্ষা বর্ষেই শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আগামী বছরের জানুয়ারিতে পাবনা মেরিন একাডেমির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, সারা দেশে নৌ পথ উন্নয়নের কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই টেন্ডার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যেই ঠিকাদাররা কাজ শুরু করার জন্য ওয়ার্ক অর্ডার পেয়ে যাবে। সব কিছু মিলিয়ে কাজ শুরুর প্রক্রিয়াটি এখন চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শেখ হাসিনার নির্বাচনী অঙ্গীকার দেশে নতুন করে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ তৈরীতে সক্ষম হবে সরকার।

উল্লেখ্য, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে রাশিয়া থেকে ভারি যন্ত্রপাতি মোংলা হয়ে রূপপুর প্রকল্প পর্যন্ত নৌপথে সহজে পৌঁছানোর জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ৯৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে মোংলা-চাঁদপুর-মাওয়া-গোয়ালন্দ-পাকশী নৌরুট খনন করছে। ইতোমধ্যে ভারি যন্ত্রপাতি নিয়ে ২২টি জাহাজ মোংলা থেকে পদ্মানদী দিয়ে রূপপুর প্রকল্পে পৌঁছেছে। আরো তিনটি জাহাজ মোংলা থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রূপপুর প্রকল্পে পৌছানোর কথা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ নং ইউনিটের প্রথম কংক্রিট ঢালাই উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পথে এগিয়ে যায় এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎ ক্লাবে পদার্পণ করে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৩ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!