রোস্টার করে সাপ্তাহিক ছুটি শিল্পকারখানায়

অর্থনীতি: বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে গত ১৯ জুলাই থেকে সারাদেশে শিডিউল করে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং করছে সরকার। এতে অর্থনীতির ওপর যেন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সেজন্য শিল্পকারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে উৎপাদনমুখী সব শিল্পকারখানায় রোস্টার করে সাপ্তাহিক ছুটি ঘোষণার পক্ষে মত দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, লোডশেডিং পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করতে শিল্পকারখানাগুলোতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন সমন্বয় করা হবে। এ ধরনের সব প্রতিষ্ঠানকে নিয়মের আওতায় আনা হবে। সব শিল্পকারখানা একই দিনে বন্ধ থাকবে না। সপ্তাহের ভিন্ন ভিন্ন দিনে সাপ্তাহিক ছুটি বা বন্ধ রাখা হবে। শিল্পকারখানায় সাপ্তাহিক ছুটির দিন সমন্বয় হলে বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর চাপ কিছুটা কমে আসবে। গতকাল সোমবার সকালে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বিদ্যুৎ সচিব এসব কথা জানান। তিনি বলেন, কোনো কারখানাই পুরোপুরি বন্ধ রাখতে বলা হয়নি। কারখানাগুলোতে তো সপ্তাহে একদিন ছুটি থাকেই। এখন ছুটিটা শুধু শুক্রবার থাকবে না। সপ্তাহের অন্যান্য দিনও এ ছুটি ভাগাভাগি করে দেওয়া হবে। হাবিবুর রহমান বলেন, সাপ্তাহিক ছুটি একই দিনে হওয়ায় সপ্তাহের বাকি ছয়দিন শিল্পকারখানাগুলোতে সমানভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয়। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর চাপ বাড়ে। নির্দিষ্ট ছুটির একদিন (শুক্রবার) সেই চাপ একেবারে কমে আসে। এবার সপ্তাহের একেক দিন একেক অঞ্চলের কারখানা বন্ধ বা খোলা থাকবে।
তিনি বলেন, এতে বিদুৎ সরবরাহের ওপর যেমন চাপ কমবে, কারখানাগুলোও সাপ্তাহিক ছুটি বহাল রেখে উৎপাদন সচল রাখতে পারবে। এভাবেই শিল্পকারখানায় সাপ্তাহিক ছুটি সমন্বয় করা হবে। যেন প্রতিটি কারখানায়ই একদিন করে রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধ রাখা নিশ্চিত করা যায়। অন্য এক প্রশ্নে বিদ্যুৎ সচিব বলেন, যদি কোনো কলকারখানা ওভার টাইম করিয়ে বাড়তি উৎপাদন করে, সেটিও তারা করতে পারবে। আবার যেসব কারখানা সপ্তাহে সাতদিনই খোলা রেখে কর্মীদের শিডিউল করে ছুটি দেয়, তাদেরও তো নির্দিষ্ট একটা দিন থাকে, যেদিন বেশিরভাগ কর্মী ছুটি কাটায়। ওই নির্দিষ্ট দিনটিতে ক্যাপ্টিভয়ের মাধ্যমে (বড় জেনারেটর দিয়ে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন) কারখানা চালু রাখা যেতে পারে। এতে কোনো বাধা থাকবে না। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিমন্ত্রীর (বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি প্রতিমন্ত্রী) সভায় ব্যবসায়ী নেতারা ছিলেন, তারা সাপ্তাহিক শিডিউল করে শিল্পকারখানা চালু ও বন্ধ রাখার বিষয়ে কোনো আপত্তি জানাননি। তিনি আরও বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সেগুলোর সঙ্গেও কথা বলে আমরা সাপ্তাহিক ছুটি সমন্বয় করবো। কবে থেকে শিল্পকারখানায় সাপ্তাহিক ছুটির নতুন এ শিডিউল শুরু হবে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ সচিব বলেন, আজই (সোমবার) আমরা চিঠি দেওয়া শুরু করবো। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সারাদেশে এটি কার্যকর হবে। তবে কোন এলাকায় কখন বন্ধ বা চালু রাখা হবে তা প্রতিষ্ঠান মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমন্বয় করা হবে। পরে সেই রোস্টার জানিয়ে দেওয়া হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!