শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে বুঝবেন কীভাবে?

লাইফস্টাইল : শরীরের জন্য প্রোটিন খুবই প্রয়োজনীয়। এর অভাবে স্বাস্থ্য ভেঙে যেতে পারে। শরীরে নতুন নতুন কোষ তৈরিতে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ কারণে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন-
১. প্রোটিন শরীরে শক্তি জোগায়। এর ঘাটতি হলে সারা দিন ক্লান্ত লাগতে পারে। ঘুম-ঘুম ভাব থাকতে পারে। সাধারণত যেমন ক্লান্ত লাগে, তার থেকে বেশিই ক্লান্তি আসতে পারে। বেশি কাজ করলে ক্লান্ত বোধ করা স্বাভাবিক। কিন্তু ক্লান্তিভাব যদি অতিরিক্ত মাত্রায় হয় তাহলে তা প্রোটিনের ঘাটতির লক্ষণ। ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়া বা সুস্থ হতে সময় লাগা ইত্যাদিও শরীরে প্রোটিনের অভাবের কারণে হতে পারে।
২. পেশি গঠনে ও মজবুত করতে সাহায্য করে প্রোটিন। তাই বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, যারা বডি বিল্ডিং করেন বা মাংসপেশি তৈরি করেন, তারা প্রোটিন জুস বা শেক খেয়ে থাকেন। যদি শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি থাকে, তা হলে পেশিতে জোর থাকবে না। কোনও ভারী জিনিস তুলতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রোটিনের ঘাটতি হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
৩. প্রোটিন শরীরের অন্যতম প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস। যদি শরীরে এর ঘাটতি থাকে তা হলে শরীর খিদের পরিমাণ বেড়ে যায়।
৪. ২০১৯ সালে ‘ইন্ডিয়ান ডারমাটোলজি অনলাইন জার্নালে’ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রোটিনের ঘাটতি হলে ত্বক, চুল, ও নখের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফলে ত্বকের বলিরেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বার্ধক্যজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। হাড় এবং পেশি দুই’ই প্রোটিনের অভাবে দুর্বল হয়ে যায়। শক্তিশালী হাড়ের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত অপরিহার্য। প্রোটিন ক্যালসিয়ামের শোষণ বৃদ্ধি করে হাড়কে শক্ত রাখতে ভূমিকা রাখে।
৫. প্রোটিনের অভাবে দেহে ফোলাভাব তৈরি হতে পারে। আর এই সমস্যা থেকে লিভার নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। প্রোটিন শরীরে নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। আর তাই প্রোটিনের অভাবে শরীরে পানি জমতে শুরু করে, যার ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যেতে শুরু করে। বিশেষ করে চোখ এবং হাতে ফোলাভাব বেশি নজরে পড়ে। এ ছাড়া এর অভাবে রক্তশূন্যতাও হতে পারে।
৬. প্রোটিন নখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। যদি নখের রঙ অনেকটা সাদা অথবা ফ্যাকাশে হয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে শরীরে প্রোটিনের অভাব দেখা দিয়েছে।
৭. প্রোটিনের অভাবে ত্বক অনেক বেশি রুক্ষ আর শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকের মসৃণতা নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময়ে চামড়া ফেটে যায়। প্রোটিনের ঘাটতি থেকে চুলের সমস্যাও দেখা দেয়। অনবরত চুল উঠতে থাকে।
৮. নখ ও চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রোটিন একটি সাহায্যকারী উপাদান। চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা অনেকসময়ে বংশগত কারণেও হতে পারে। কিন্তু তা যদি বেশি পরিমাণে হতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!