শীতের প্রভাবে ঝুঁকি বাড়ে যেসব কারণ
স্বাস্থ্য: ধীরে ধীরে বাংলাদেশে শীতের আগমন ঘটছে, এ সময় মজা করে পিঠা-পুলি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু অস্বস্তিকর ব্যাপারও ঘটে থাকে, যেমন চামড়ার সমস্যা, জ¦র, সদির্, কাশি ইত্যাদি। কিন্তু সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাপার হলো শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, হাটের্র ব্যথা, হাটর্ অ্যাটাক ও এর মৃত্যুঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তথ্য থেকে জানা যায়, প্রতিবার শীতকালে হাটর্ অ্যাটাকে রোগী ৩০ ভাগ থেকে ৫০ ভাগ বৃদ্ধি পায়। শীতের প্রভাবে রক্তচাপের পরিমাণ ১২ থেকে ১৮ মিলিমিটার পযর্ন্ত বাড়তে পারে, যা গবেষণায় প্রমাণিত। শীতের প্রভাবে রক্তনালি সংকুচিত হওয়ার ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি ঘটে থাকে।
শীতের প্রভাবে রক্তের উপাদানে অনেক পরিবতর্ন পরিলক্ষিত হয়। রক্ত জমাট বাঁধার জন্য দায়ী রক্তকণিকা, লোহিত কণিকা, ফিব্রিনোজেন এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, ফলে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বৃদ্ধি পায় শতকরা ২০ ভাগ পযর্ন্ত। রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য হাট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের প্রবণতা অনেক গুণে বৃদ্ধি পায়।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, অত্যধিক শীতের প্রকোপে হাটের্র অনিয়মিত হৃদস্পন্দন শুরু হতে পারে, যার ফলে তাৎক্ষণিক মৃত্যু ঘটাও অস্বাভাবিক নয়।
পেট ভরে খেয়ে ঠা-া আবহাওয়ায় হাঁটাহাঁটি করলে খুব সহজেই এনজিনার ব্যথা শুরু হয়ে যায়। যার জন্য রক্তনালির সংকোচনকেই দায়ী করা হয়। সুস্থ সবল ব্যক্তিরা খুব সহজে ঠা-াজনিত এসব পরিবতের্নর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন কিন্তু যারা শারীরিকভাবে দুবর্ল, বয়সের ভারে ন্যুব্জ, যারা বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত তারা এসব পরিবতের্নর ফলে খুব সহজেই আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকার জন্য আপনার প্রস্তুতি এবং সতকর্তা আপনাকে ঝুঁকিমুক্ত থাকতে সাহায্য করবে। মনে রাখবেন ধীরে ধীরে শীত আসার চেয়ে হঠাৎ শীত ঝেঁকে বসলে শরীর পরিবতির্ত অবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর সুযোগ পায় না বলে এ মুহূতের্ তাৎক্ষণিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।
সতকর্তা ও করণীয়
১. চিকিৎসকের পরামশর্ অনুযায়ী হৃদরোগীরা নিয়মিত ওষুধ সেবন করবেন।
২. শীতের শুরুতে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামশর্ করে সঠিক চিকিৎসা ও ওষুধপত্রের মাত্রা ঠিক করে নিন।
৩. ঠা-া আবহাওয়ায় বাইরে যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং কাপড় সঙ্গে রাখুন।
৪. বাইরে হাঁটাহাঁটি করতে যাওয়ার সময় গরম কাপড়, জুতা, ছাতা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে নিয়ে বের হবেন।
৫. বয়স্ক হৃদরোগীরা প্রতিদিন গোসল না করে একদিন পর পর হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করবেন। মনে রাখবেন খুব বেশি গরম পানি দিয়ে গোসল আপনার স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
৬. পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের পরিমাণ বিশেষ করে শকর্রা জাতীয় খাবার ১৫ ভাগ থেকে ২০ ভাগ বৃদ্ধি করা উচিত। বয়স্ক হৃদরোগী শীতকালীন বৃষ্টির সময় ঘরের বাইরে না যাওয়াই উত্তম।
৭. নিয়মিত আবহাওয়ার পূবার্ভাস জেনে নেবেন, যাতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারেন।