সর্ববৃহৎ মসজিদের উদ্বোধন ফিজিতে

ধর্মপাতা: দ্বীপরাষ্ট্র ফিজির মুসলমানরা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লৌটোকাতে সর্ববৃহৎ মসজিদ উদ্বোধন করেছেন। দৃষ্টিনন্দন ও সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন মসজিদটি তৈরিতে খরচ পড়েছে দেড় মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় এক কোটি বিশ লাখ টাকা)। শনিবার (০৬ এপ্রিল) মসজিদটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়।
মসজিদ-নির্মাণ কমিটির সদস্য নাসির খান বলেন, এ রকম মসজিদ তৈরির মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে মসজিদে আনতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। আর এর ফলে তারা মসজিদে এসে ভালো ও উত্তম কিছু শিখতে পারে। অন্যদিকে যারা নামাজ পড়ার জন্য অনেক দূরে ভ্রমণ করতে পারে না, তাদের জন্য সুবিধা হবে।
তিনি আরো বলেন, আজকাল এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর ও দুর্লভ হয়ে গেছে, যারা মসজিদে আসা-যাওয়া শুরু করা মাত্রই ইসলামে নিষিদ্ধ ও নিন্দনীয় কাজগুলো থেকে বেঁচে থাকতে শুরু করবেন। সুতরাং এখানে মসজিদ তৈরির মাধ্যমে শিশুদের ছোটকাল থেকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা হবে।
ফিজির সর্ববৃহ মসজিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমবেত মুসল্লিরা। ছবি : সংগৃহীত
ফিজির মুসলমানদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হওয়ায় তারা অনেক দিন ধরে একটি বৃহৎ মসজিদ নির্মাণের দাবি করেন। সে প্রেক্ষিতে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।
ফিজির রাজধানী সুভা সিটি। দ্বীপরাষ্ট্রটির মোট আয়তন ১৮ হাজার ৩০০ কিলোমিটার। ফিজি দ্বীপপুঞ্জে ৮৩০টি দ্বীপ রয়েছে।
খ্রিষ্টপূর্বাব্দ ২০০০ তে পলিনেশীয় প্রভাবিত কিছু অস্ট্রেনেশীয় ও পরবর্তীকালে মেলেনেশিয়ানরা ফিজিতে বসবাস শুরু করেন। ১৭ শতাব্দী থেকে ইউরোপীয়রা ফিজি আগমন শুরু করে। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ব্রিটিশরা ১৮৭৪ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে এটি দখল করে নেয়।
ফিজির সর্ববৃহ মসজিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমবেত নারী মুসল্লিরা। ছবি : সংগৃহীত
ফিজির সমাজ মিশ্র-ধর্মীয়। মোট জনসংখ্যার ৬৪.৪% খ্রিস্টান, ২৭.৯% হিন্দু ও ৬.৩% মুসলিম। মুসলিমদের মোট সংখ্যা ৬২ হাজার ৫৩৪ জন।
মহানবী (সা.) এর জন্মদিবসে ফিজিতে সরকারি ছুটি রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য ধর্মের বিশেষ দিনগুলোতেও ছুটির নিয়ম রয়েছে।
গত মাসে নিউজিল্যান্ডের দুই মসজিদে বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞে নিহত ৫০ মুসল্লির মধ্যে তিনজন ফিজির নাগরিক ছিলেন। এদের একজন ছিলেন শেখ হাফিজ মুসা প্যাটেল। তিনি নিহত হওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন। এর আগে তিনি প্রায় ২৫ বছর লৌটোকা জামে মসজিদের ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন।
ফিজির মুসলমানরা সবাই সুন্নি। তারা হানফি মাজহাব অনুসরণ করেন। ফিজিতে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ বেশ সক্রীয়। ভারতবর্ষে শিক্ষা নেওয়া অনেক আলেম-উলামা সে দেশে রয়েছেন। তাদের দাওয়াতের কারণে ফিজির জনগনের কাছে দিন দিন ইসলামের সৌন্দর্য ফুটে উঠছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!