সাঁথিয়ায় চাঞ্চল্যকর রাজা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৫

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার সাঁথিয়ার চাঞ্চল্যকর রাজা প্রামানিক হত্যা মামলার ৪৯ দিন পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সেইসাথে হত্যার সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিহত রাজা প্রামানিক উপজেলার শ্রীধরকুড়া গ্রামের মৃত সিরাজ প্রামানিকের ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সিএনজি চালক জয়নাল আবেদীন (২৫), নিহত রাজার পূর্বপরিচিত অনিক হোসেন (১৮), হৃদয় হোসেন (১৯), মামুন হোসেন (২৩) ও আসিক ফকিরকে (২৫)। বুধবার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, রাজা প্রামানিককে চলতি বছরের ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় জয়নালের সিএনজি করে অনিক ও হৃদয়ের সাথে রাজা পিকনিকে খাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে কাশিনাথপুরের বরাটের দিকে যায়। নির্ধারিত সময়ে রাজা বাড়ি না ফিরলে তার স্ত্রী রাশিদা খাতুন খৌঁজ শুরু করেন।
ঘটনার তিনদিন পর ২০ জুলাই সকালে সাঁথিয়ার সোনাকুড়া বরাট গ্রামের সরকারি ক্যানেলের কচুরীপানার মধ্য থেকে রাজার অর্ধগলিত লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রাশিদা খাতুন পরদিন ২১ জুলাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ মামলা দায়েরের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জয়নাল, হৃদয় ও পিয়াসকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থেকে অভিযান চালিয়ে অপর ২ জন মামুন খান ও আশিক ফকিরকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশের কাছে আসামী মামুন খান (২৩) তার প্রদত্ত জবানবন্দিতে জানায় যে, ভিকটিম রাজা প্রামানিক মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। মাদক খাওয়ার টাকা পয়সাকে কেন্দ্র করে আসামী হৃদয় এবং অনিকের সাথে ঝামেলা ছিল। অপর আসামী মামুন এবং জুয়েলের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে সাঁথিয়া থানায় মাদকদ্রব্য আইনে একটা মামলা হয়। এই মামলার সোর্স হিসেবে ভিকটিম রাজা ছিল বলে আসামীদের ধারণা।
আর এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী রনির সাথে একটি খাস পুকুর ও জমির দখল নিয়ে বিরোধ ছিল। উক্ত বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে কৌশলে ভিকটিম রাজা প্রামানিককে জয়নাল এর সিএনজি যোগে হৃদয় ও অনিক কে দিয়ে ডেকে নিয়ে আসার পর মাদকদ্রব্য গাঁজা খাওয়ার কথা বলে সোনাকুড়া বরাট গ্রামের সরকারী ক্যানেলের ধারে পাটক্ষেতে নিয়ে যায় এবং রাত অনুমান দশটা থেকে এগারোটার মধ্যে রনির নেতৃত্বে  হৃদয়, জয়নাল, অনিক, জুয়েল, মামুন, আশিক, এনামুল হক ও সোহেলগন মিলে ভিকটিম রাজাকে গলাটিপে হত্যা করে মৃতদেহ পার্শ্ববর্তী ক্যানেল-এ কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রাখে। পুলিশ নিহত রাজার মোবাইল ও৷ একটি সিএনজি গাড়ি জব্দ করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, আসামীদের গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামী মামুন খান বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!