সাঁথিয়ায় পানি নিষ্কাশন ক্যানেলে সুতি জালের বাধ: জমির আবাদ ব্যাহত
নিজস্ব প্রতিবেদক, সাঁথিয়া: সুতি জালের বাধ না দেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক মাইকিং করা সত্ত্বেও পাবনার সাঁথিয়া-বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাকেশ্বরী-ডি-২ ক্যানাল “ কৈটোলা পাম্প হাউজ হতে মুক্তার ধর ” পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার ক্যানালে প্রায় ৮-১০টি স্থানে মাছ ধরার জন্য সুতিজালের বাধ দিয়ে পানি প্রবাহে বাধা সুষ্টি করছে এলাকার কতিপয় মৎস্য শিকারিরা। ফলে হাজার হাজার বিঘা জমি অনাবাদী থাকার স¤া¢বনা রয়েছে এবং রবি আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করেছেন কৃষকেরা। এদিকে কৃষকের ধান এখনও পানির মধ্যে থাকায় ফুসে উঠেছেন তারা।
জানা যায়, কৈটোলা পাম্প হাউজ হতে মুক্তার ধর পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি নিস্কাশনের ক্যানাল রয়েছে। এ ক্যানাল দিয়ে বর্ষা শেষে পানি দ্রুত নিস্কাশিত হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ক্যানালে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ধরার জন্য প্রায় ৮/১০ টি স্থানে সুতিজাল দিয়ে বাধ দেয়া হয়েছে। এ কারণে টেংড়াগাড়ী বিল,মুক্তাহারের বিল,সোনাই বিল,কাটিয়াদহের বিল,গজারিয়া বিল,গৌরীগ্রামের বিল, ঘুঘুদহের বিলসহ এখনও অনেক বিলে পর্যাপÍ পানি রয়েছে। বাঁশ, তালাই, পলিথিন,নেট, ইত্যাদি ব্যবহার করে এমনভাবে সুতিজাল (মাছ ধরার যন্ত্র) তৈরী করা হয় যাতে পানি প্রবাহের গতি কমে যায়।এদিকে এখনও পানির মধ্যে রয়েছে কৃষকের ধান। এসব বিল থেকে দ্রুত পানি নিস্কাশন না হওয়ায় সাঁথিয়া বেড়ার প্রায় ১০/১২টি বিলের লক্ষ লক্ষ টাকার ধান পঁচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে বিলের পানি যথাসময়ে নিস্কাশন না হলে কৃষকের বীজতলা তৈরি, পেঁয়াজের দানা, রসুন, ধানের চারা, শরিষা, মরিচসহ রবি শস্য রোপণ করতে না পারলে তারা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হবে।
উপজেলার বিভিন্ন বিল এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়,শামুকজানী বাজারের পাশে, দত্তপাড়া, বড়গ্রাম, টেংড়াগাড়ীর বিল, তালপট্টি বাজারের পাশে,সাতানীর চর গ্রামের ক্যানেলসহ বেশ কয়েকটি স্থানে সুতিজালের বাধ দেওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এমনও জায়গা আছে পর পর দুইটা সুতিজালের বাধ। ওইসব সুতিজালের বাধ দেয়া ব্যক্তিদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও ক্ষমতাসীনদের ম্যানেজ করে সুতি দিচ্ছি। সুতি দেওয়ায় ফলে দ্রুত পানি নিস্কাশন না হওয়ায় রবি শস্য বপণের মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে বলে শামুকজানি,ভবানীপুর,ঘুঘুদহ গ্রামের মোজাম,চাঁদ আলী,মন্জু জানান। পানি দ্রুত নিস্কাশন না হওয়ায় তারা বীজতলা দিতে পারছে না। ঘুঘুদহ গ্রামের কাউছার,মজনু বলেন, আমাদের ধান এখনও পানির মধ্যে। ধান পেকে ধান গাছ থেকে আবার গাছ বেড় হচ্ছে কিন্তু পানি নামছে না। কবে ধান কাটবো আর কবেই বা রবি শস্য বুনবো।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাঁথিয়াÑবেড়া অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, সুতিজালের বাধ দিয়ে মাছ ধরা সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা মাইকিং করে দিয়েছি যাতে কেউ সুতিজালের বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না করতে পারে।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জামাল আহমেদ বলেন,সুতিজাল অপসারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে স্ব স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের এ ব্যাপারে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। যারা এ হীনকাজ করে প্রতিবছর কৃষকদের ফসলের ক্ষতিসাধন করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।