সার্ক সম্মেলন : পাকিস্তানকে হুমকি ভারতের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২০১৬ সালের ৯ ও ১০ নভেম্বর পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে ১৯তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশ, ভারত, আফগানিস্তান ও ভুটান ওই সম্মেলনে অংশ নিতে আপত্তি জানালে তা স্থগিত হয়ে যায়। এরপর আর সার্ক সম্মেলন হয়নি। তবে পাকিস্তান ‘জঙ্গিবাদে মদদ’ দেওয়া বন্ধ না করলে দেশটিতে অনুষ্ঠিতব্য সার্ক সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার হুমকি দিয়েছে ভারত।
পাকিস্তান সরকারের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে গতকাল বুধবার ভারতের পক্ষ থেকে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এদিন সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে পাকিস্তান যাবেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এখন নতুন করে দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা করছে পাকিস্তান।
গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. মোহাম্মদ ফয়সাল বলে সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানাবে পাকিস্তান। সার্ক সম্মেলনের কোনও তারিখ ঘোষণা না করলেও এ নিয়ে তৎপরতা চলারই ইঙ্গিত দেন ফয়সাল। এর একদিন পর গতকাল বুধবার হায়দারাবাদে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সুষমা স্বরাজ অভিযোগ করেন, ভারতে জঙ্গি হামলায় মদদ দিচ্ছে পাকিস্তান৷ তিনি বলেন, ‘যতদিন না পাকিস্তান ভারতে সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা বন্ধ করছে, ততদিন পর্যন্ত সার্ক সম্মেলনে অংশ নেবে না ভারত৷’ পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে কর্তারপুর করিডর নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা আগে এমন সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন সুষমা স্বরাজ। কর্তারপুর করিডোর নির্মাণের জন্য ভারতই পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। সম্প্রতি পাকিস্তান তাতে সম্মতি দেয়।
এ ব্যাপারে সুষমা বলেন, ‘আমি খুব খুশি যে গত ২০ বছর ধরে ভারত কর্তারপুর করিডর নির্মাণের জন্য পাকিস্তানকে অনুরোধ জানিয়ে আসছে আর এখন সে ব্যাপারে পাকিস্তান রাজি হয়েছে। তবে এর মানে এ নয় যে শুধু এর উপর ভিত্তি করেই দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু হবে।’ উল্লেখ্য, ভারতের শিখ তীর্থযাত্রীদের জন্য পাকিস্তানে কর্তারপুর গুরুদুয়ারা দরবার সাহিব-এ যাতায়াতের ব্যবস্থা আরও সহজ করতে সীমান্তে নতুন এ করিডর নির্মাণে সম্মত হয়েছে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ। কর্তারপুর গুরুদুয়ারা দরবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের নারোয়াল জেলায় অবস্থিত।
সীমান্ত থেকে একেবারে কাছে এই জায়গা শিখদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র। ভারতীয় শিখরা প্রতিবছর সীমান্ত পেরিয়ে গুরুনানকের হাতে তৈরি এই পবিত্র স্থানে উপস্থিত হন। ১৫২২ সালে এটি তৈরি হয়। জীবনের শেষ ১৮ বছর এখানেই কাটিয়েছেন গুরুনানক। এতোদিন শিখ তীর্থযাত্রীদের পাকিস্তানে যেতে ভিসা প্রয়োজন হলেও তাতে কোনও বাধা ছিল না। যে কেউ কর্তারপুরের গুরুদুয়ারায় যেতে পারতেন। তার জন্য পাকিস্তান সরকারের বিশেষ অনুমতি লাগতো না।
শিখরা বছরে চারটি অনুষ্ঠানে কর্তারপুরে যেতেন। তবে করিডরটি নির্মিত হলে শিখরা সারা বছর গুরুদুয়ারায় যাওয়ার সুযোগ পাবেন। ভারতের অংশে করিডোর শুরু হবে গুরুদাসপুরের ডেরা বাবা নানক থেকে। আর শেষ হবে আন্তর্জাতিক সীমান্তে। আর পাকিস্তানের অংশে করিডোর শুরু হবে গুরুদুয়ারা দরবার সাহিব,কর্তারপুর থেকে।