সিটি নির্বাচন: প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণা শুরু
ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচারে নেমছেন প্রার্থীরা। ১৮ দিনের প্রচার শেষে ৩০ জানুয়ারি হবে ভোটগ্রহণ। দুই সিটিতে মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদ মিলিয়ে মোট ৭৫৮ জন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে আছেন এবার। প্রতীক পাওয়ার আগে ভোটের প্রচারের নিয়ম না থাকলেও বিধি লঙ্ঘন করে আগে থেকেই বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাতে দেখা গেছে। এ নিয়ে ইসিতে অভিযোগও হয়েছে।
শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলার বিষয়টি ‘কঠোরভাবে’ তদারকি করবেন তারা। সকালে আগারগাঁওয়ে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে (এনআইএলজি) উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এবং গোপীবাগের সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারে দক্ষিণের রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রতীক বুঝে নেন মেয়র পদের প্রার্থীরা। মেয়র পদে দুই সিটির ১৩ প্রার্থীর সবাই ইসিতে নিবন্ধিত দলের মনোনীত হওয়ায় যার যার দলীয় প্রতীক নিয়েই তারা লড়বেন। আর কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের মধ্যে ইসিতে নির্ধারিত প্রতীকের তালিকা থেকে বরাদ্দ করছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম বলেন, আজ থেকে ভোটের যুদ্ধ চলে যাচ্ছে মাঠে। এই মাঠকে কোনো ক্রমেই আমরা ঘোলাটে করতে দেব না। আমার জীবনে সব সময় অনুরোধ করে আসছি, কখনো ‘নির্দেশ’ কথাটা বলি না। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে বলতেই হচ্ছে। নির্বাচন যেন ‘উৎসব’ হতে পারে, সেই চেষ্টা থাকবে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, এটাকে কোনো ক্রমেই সংঘর্ষের রূপ নিতে দেব না। মলিন হতে দেব না।
আর দক্ষিণের রির্টানিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে প্রার্থীরা এখন আইন মেনে প্রচার চালাতে পারবেন। দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকিং করা যাবে। প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিয়ে ক্যাম্প স্থাপন করতে পারবেন। সেখানে শুধু নির্বাচনি প্রচার চালাতে পারবেন। কোনো ধরনের মিছিল, শো-ডাউন, বড় ধরনের জনসভা ও তোরণ নির্মাণ করা যাবে না। তবে ঘরোয়া বৈঠকে প্রার্থীরা অংশ নিতে পারবেন।
বাতেন বলেন, অনেক প্রার্থীর পক্ষে আগেই পোস্টার লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদারকি করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ইতোমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের পর কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের প্রতীক দেওয়া শুরু হয়। এই কার্যক্রম বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে। ঢাকা উত্তরে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৫৪টি পদে ২৫১ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১৮টি পদে ৭৭ জন ভোটের লড়াইয়ে থাকছেন।
আর দক্ষিণে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৭৫টি পদে প্রার্থী হয়েছেন ৩৩৫ জন। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ২৫টি পদে মোট ৮২ জন এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলামের পক্ষে প্রতীক বুঝে নেন তার প্রতিনিধি তৌফিক জাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, আজকে থেকে আমাদের নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু হতে চলেছে। যেহেতু তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী, তাই আমাদেরকে নির্বাচনি আচরণবিধি খুব কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
আর বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে প্রতীক বুঝে নিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমরা আজকে প্রতীক বরাদ্দ পেলাম। উত্তরা থেকে আমাদের নির্বাচনি প্রচার কাজ শুরু হবে। আশা করি উৎসবমুখর পরিবেশেই ভোট হবে। উত্তর সিটিতে পিডিপির মেয়রপ্রার্থী শাহীন খান বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কা করছি। তবে নির্বাচন উৎসবমুখর হোক এটাই চাই।
আর এ সিটিতে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ বলেন, নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবু আমরা শেষ পর্যন্ত থাকব।
নির্বাচন যদি আমরা ছেড়ে দিই, তা হলে নির্বাচন উন্মুক্ত হয়ে যাবে। উন্মুক্ত হয়ে গেলে জঞ্জাল বৃদ্ধি পাবে। আমরা তা করতে দেব না। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ভোটার আছেন ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন; আর দক্ষিণে ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮ জন। স্থানীয় সরকারের এ প্রতিষ্ঠানে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে ৩০ ডিসেম্বর ইভিএমে ভোট দেবেন তারা।