সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে ভারত-চীনের শীর্ষ জেনারেলরা বৈঠক
বিদেশ : সীমান্তে দীর্ঘ একমাস ধরে উত্তেজনা চলার পর অবশেষে বৈঠকে বসেছে ভারত ও চীনের শীর্ষস্থানীয় জেনারেলরা। দেশ দুটির সীমান্ত সংঘাত যে কতটা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর একেবারে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যকার এই বৈঠক তারই প্রমাণ। উত্তেজনা শুরুর পর স্থানীয় সামরিক পর্যায়ে বেশ কয়েকটি বৈঠক এর আগে হয়েছে।
কিন্তু তা উত্তেজনা প্রশমনে সমর্থ হয়নি। অবশেষে দুই দেশের একেবারে শীর্ষ পর্যায়ের জেনারেলরা আলোচনায় বসেছেন। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার সংঘাত নিরসনে এর আগে কখনো দুই দেশের কোর কমান্ডারদের মধ্যে বৈঠক হয়নি। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর সীমান্তে লাদাখের পূর্বে অবস্থিত লেহ জেলার অন্তর্গত প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (এলএসি) লাগোয়া চুসুলে এই বৈঠকে অংশ নেবেন দুই দেশের কোর কমান্ডাররা।
এলএসির বিবাদ মেটাতে এর আগে সর্বোচ্চ ডিভিশনাল কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠক শুরুর সপ্তাহখানের আগে চীনা সেনাবাহিনীর ‘ওয়েস্টার্ন থিয়েটারের’ প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন জেনারেল জু ওইলিং। চীনের পক্ষে কট্টরপন্থী এই জেনারেল এবং ভারতের পক্ষে বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করবেন দেশটির ১৪ কোরের জেনারেল কর্মকর্তা কমান্ডিং (জিওসি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিং। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সবশেষ এই সীমান্ত বিবাদ হাতাহাতি এবং ধ্বস্তাধস্তি পর্যন্ত পৌঁছায়।
সীমান্ত থেকে বেশি কিছু ভারতীয় সেনাকে আটক করে রাখার কয়েক ঘণ্টা পর আবার ছেড়ে দেয় চীনা সেনারা। এই বিবাদ নিয়ে নয়াদিল্লি এবং বেইজিংয়ে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীও তটস্থ হন। কাশ্মীরের লাদাখ এবং সিকিমে তিব্বত সংলগ্ন সীমান্ত এলাকায় এমন পরিস্থিতি তৈর হওয়ার পর দুই দেশে নিজ নিজ সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে।
সীমান্ত এলাকাগুলোতে অস্থায়ী সেনা ছাউনিও তৈরি করে দুই দেশ। সেই অস্থায়ী সেনা ছাউনি ও অতিরিক্ত সেনা ভারত-চীনের কেউই এখনো প্রত্যাহার করেনি। ভারত-চীনের সীমান্ত সংঘাত নতুন নয়। দুই দেশের মধ্যে থাকা ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটারের বেশিরভাগই বিতর্কিত এবং অনির্ধারিত। দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে সামরিক এই বৈঠককে অনাকাঙ্খিত হিসেবে অভিহিত করেছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর নর্দান অঞ্চলের অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার লে. জেনারেল ডিএস হুদা।