সৌন্দর্যের বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদে কোরীয় নারীরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্যারিয়ার, সম্পর্ক, চাকরিসহ অনেক ক্ষেত্রে নারীদের সফলতার পেছনে কাজ করে তাদের সৌন্দর্য। পুরুষতান্ত্রিক এমন ধারণার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দক্ষিন কোরিয়ার নারীরা। তারা তাদের মাথার চুল কেটে ছোট করে ফেলছেন এবং সৌন্দর্য বাড়াতে ব্যবহৃত মেকআপ ও সাজের সরঞ্জাম নষ্ট করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। ‘এসকেপ দ্য করসেট’ নামের এই প্রতিবাদের ছবি ও ভিডিও অনলাইনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
প্রতিবাদে অংশ নেয়া নারীরা জানাচ্ছেন, নারীদের সৌন্দর্যই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাজ করে এজন্য তারা মেকআপ ব্যবহারে বাধ্য হন। বিভিন্ন উপাদান দ্বারা ত্বকের যতেœর জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় করেন। তাদের অভিযোগ শুধুমাত্র সৌন্দর্য বাড়াতে তাদের এক দুই ঘন্টা আগে ঘুম থেকে উঠতে হয়।
অভিযোগ উঠেছে মেকআপ বিপণন সংস্থাগুলির বিরুদ্ধেও। বিবর্ণ নরম ত্বক এবং গোলাপি ঠোঁটেই মহিলারা সুন্দর সৌন্দর্যের পন্য বিক্রি করতে সব সময় এই ধরনের বার্তাই দেওয়া হয়। এমনকি এই সৌন্দর্যের মান বজায় রাখার চাপে অনেক সময় প্লাস্টিক সার্জারি করাতেও পিছুপা হন না অনেক নারী। এক পরিসংখ্যান বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতি তিন জনের মধ্যে এক জন মহিলা শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যই এই অস্ত্রোপচার করান। এমনকি এই কারণেই সিউলকে বিশ্বের প্লাস্টিক সার্জারির রাজধানী বলা হয়।
শুধু মুখের সৌন্দর্যই নয়, সমাজের তৈরি করে দেওয়া মাপকাঠির মর্যাদা রাখতে মহিলাদের মাথায় রাখতে হয় আরও বেশ কয়েকটি বিষয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ‘পুরুষতান্ত্রিক সমাজের’ ঠিক করে দেওয়া সৌন্দর্যের মাপকাঠি তারা মানবেন না তারা।
এই প্রতিবাদে অংশ নিয়ে ‘আই অ্যাম নট প্রিটি’ বলে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন জনপ্রিয় ইউটিউবার লিনা বে। ভিডিওর শুরুতে দেখা যায়, চড়া মেকআপ করছেন তিনি। পাশে তার সুন্দর মুখের প্রশংসায় রয়েছে নানা কমেন্ট। তবে ভিডিওর শেষ অংশে যখন তিনি তার মেকআপ তুলে ফেলছেন তখন ফলোয়ারদের কমেন্ট পুরোপুরি পাল্টে গেছে। কেউ কেউ লিখেছে, ‘আপনার মুখ দেখে আমার ভয় লাগছে’ বা ‘আপনার মতো ত্বক কোনও মহিলার হওয়া উচিত নয়!’ এমন মন্তব্য। ভিডিওর শেষে লিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি সুন্দর নই। তবে তাতে আমার আক্ষেপও নেই। জানবেন, আপনি যেমন তাতেই আপনি স্পেশ্যাল!’