প্রাণ ফিরছে বেড়ার তাঁত কারখানাগুলোতে
নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে পরা বেড়া উপজেলার তাঁত কারখানাগুলো আবার কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে। মেশিনের শব্দে আবারো প্রাণ ফিরে পেয়েছে বেড়া উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার তাঁতকারখানা। দীর্ঘদিন পর কাজে ফিরতে পারায় হাসি ফুটেছে এর সাথে জড়িত সদস্যদের। করোনা ভাইরাসের কারণে কাজ বন্ধ রেখে নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছিল এসব মানুষ।
পাবনা জেলার বেড়া-সাঁথিয়া তাঁত শিল্পের জন্য বিখ্যাত। বেড়া উপজেলার মোহনগঞ্জ, পেঁচাকোলা, নয়নপুর, হরিরামপুর,মাছখালী, ঘিওর, রাকশার লয়লাপাড়া এলাকার অধিকাংশ মানুষ তাঁত নির্ভর। এছাড়াও অন্যান্য ইউনিয়ন ও বেড়া পৌরসভাতেও প্রচুর সংখ্যক তাঁত রয়েছে। প্রতিটি তাঁত কারখানায় আবার চলে হাজার হাজার তাঁত শ্রমিকের জীবন। এসব প্রান্তিক তাঁত শ্রমিকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লুঙ্গি বুনে যায়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে কারণে তাঁত কারখানাগুলো বন্ধ ছিল।
দিন মজুরি ভিত্তিতে চলা এসব পরিবারে তাই ছিল দুর্দিন। অনেক পরিবার নিয়ে তার এতদিন মানবেতর জীবন যাপন করেছে। তাদের জীবন জীবিকার প্রধান উৎস তাঁত থেকে উৎপাদিত লুঙ্গী বাজারজাত করণের মাধ্যমে অর্জিত হয়। এসব এলাকায় উৎপাদিত কাপড়ের মধ্যে লুঙ্গি প্রধান। এসব লুঙ্গি পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে কিনে নিয়ে যায় আবার নিজেরাও দেশের বিভিন্ন স্থানের হাটে সরবরাহ করে থাকে।
টেকসই হওয়াতে এই এলাকার তৈরি লুঙ্গির ব্যাপক সুনাম রয়েছে। সারা বছর লুঙ্গি বুনলেও বছরের দুই ঈদকে সামনে রেখে তাদের লাভ লোকসানের সব হিসাব নিকাশ থাকে। তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য যখন স্থবির তখন এর প্রভাব পরেছে তাঁত কারখানাগুলোতেও। বিপাকে পরে এর সাথে জড়িত হাজার হাজার পরিবার।
সপ্তাহখানেক হলো এসব তাঁত কারখানাগুলো আবার সচল হতে শুরু করেছে। তাঁতীরা এখন দিন রাত ব্যস্ত লুঙ্গি তৈরিতে। যদি কিছুটা হলেও ঈদের আগে লোকসানের বোঝা কমানো যায়।
উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের তাঁতী দ্বীন আমিন, মামুন জানান, অনেকদিন পর আবার কাজ করতে পেরে ভালো লাগছে। আর তো সময় নাই। এখনি শুরু করতে না পারলে এত আর্থিক ক্ষতি পোষাবো কিভাবে? তাদের লক্ষ একটাই এই আর্থিক ক্ষতি পূরণ করা।